বরিশাল নগরীর এক আটা-ময়দার মিল মালিক তিনদিন পূর্বে হারিয়ে যাওয়া দুই লাখ টাকা ফিরে পেয়েছেন। এক দিনমজুর স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে তার টাকা ফিরিয়ে দেন। ওই দিনমজুর কোনো উপহার নেওয়া তো দূরের কথা, নিজের পরিচয় পর্যন্ত প্রকাশ করেননি মিলমালিকের কাছে।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বিকেলে স্থানীয় এক কাউন্সিলরের মাধ্যমে এই টাকা প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
নগরীর বিসিক এলাকার সুগন্ধা ফ্লাওয়ার মিলের মালিক শংকর কুমার সাহা জানান, গত ৬ আগস্ট বিসিক এলাকার ফ্রেশ বেকারি থেকে তাকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই টাকা একটি শপিংব্যাগে নিয়ে মোটরসাইকেলে ঝুলিয়ে নগরীর হাটখোলা কার্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন।
শংকর কুমার সাহা বলেন, বিসিক এলাকার রাস্তা খানাখন্দে ভরা। এতে শপিংব্যাগ ছিড়ে টাকা পড়ে যায়। হাটখোলা গিয়ে দেখতে পাই টাকা ভর্তি ব্যাগ নেই। তাৎক্ষণিক টাকার সন্ধানে নেমে পড়ি। পথে যে কয়টি দোকানে সিসি ক্যামেরা ছিল, সকল ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কোনো সন্ধান পাইনি। গত ৮ আগস্ট দিনভর মাইকিং করি। টাকা ফিরিয়ে দিলে পুরস্কার দেয়ারও ঘোষণা দেই।
হঠাৎ করে বেলা ১১টার দিকে নগরীর দুই নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মতুর্জা আবেদীন ফোন করে বলেন, ‘আমার টাকা হারানো গেছে কিনা’। টাকার পরিমাণ কত জানতে চেয়ে নিশ্চিত হয়ে বিকেলে তার কার্যালয়ে গিয়ে টাকা নিয়ে আসতে বলেন।
তিনি বলেন, রাস্তায় টাকা কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তি গরিব মানুষ। তার পরিচয় জানাতে নিষেধ করেছেন। তাই কাউন্সিলর তার পরিচয় জানাননি। এমনকি তাকে চোখে দেখেননি বলে জানান শংকর সাহা।
কাউন্সিলর মর্তুজা আবেদীন বলেন, টাকা কুড়িয়ে পাওয়া ব্যক্তি শ্রমিক। এক কথায় দিন মজুর। টাকা কুড়িয়ে পেয়ে তার কোনো লোভ নেই। টাকা পেয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরে টাকার মালিকের সন্ধান করতে থাকেন। মাইকিং শুনে স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে তার কাছে জমা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মর্তুজা আরও বলেন, লোকটি কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা। তার পরিচয় কারো কাছে জানাতে নিষেধ করেছেন। তাই কাউকে তার পরিচয় জানানো হয়নি। সমাজে এখনও ভালো মানুষ আছে। একজন দিন মজুরের যে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রতি কোনা লোভ নেই। তা মানুষ জানুক, বলেন কাউন্সিলর।