বগুড়া জেলা পুলিশ দাবি করেছে, বগুড়ায় পরকীয়া প্রেমিকের হাতেই খুন হয়েছেন আনসার নারী সদস্য আশা দেবী। এ ঘটনায় একমাত্র আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে শিবগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তি নয়ন ইসলাম শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়ার রমজান আলীর ছেলে। নিহত আশা দেবী আনসার সদস্য ছিলেন এবং বানাইল উত্তরপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর রাতে নিজ বাড়ি থেকে ভজন মোহন্তের স্ত্রী আশা দেবীর গলায় ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, আশা দেবী এবং অভিযুক্ত নয়ন প্রতিবেশী। প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে আশা দেবীর সাথে অভিযুক্ত নয়নের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এভাবে তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক হয়। গত তিন মাস আগে নয়ন অন্য এক নারীকে বিয়ে করে। তারপর থেকে আশা দেবীর সাথে আসামি নয়ন মেলামেশা বন্ধ করে দেয়। এটি নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরপর নয়ন আশা দেবীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে নয়ন ওঁৎ পেতে থাকেন। এরমধ্যে মন্দির থেকে পোশাক পরিবর্তন করার জন্য আশা দেবী নিজ বাড়িতে যায়। ওই সময় আশা দেবীর বাড়ির সবাই পূজা মণ্ডপে ছিল। সেই সুযোগ বুঝে অভিযুক্ত নয়ন আশা দেবীর বাড়ির পেছনের ইটের প্রাচীর টপকে বাড়ির ভেতর গিয়ে আশা দেবীর শয়ন ঘরে প্রবেশ করে। তখন পূজায় যাওয়ার জন্য আশা দেবী তার পরিহিত আনসার ভিডিপির পোষাক পরিবর্তন করছিল। পরে অভিযুক্ত নয়ন আশা দেবীকে ফুসলিয়ে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক করে। পরে ওড়না দিয়ে আশা দেবীর গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ সোফার পাশে ফেলে রেখে নয়ন প্রাচীর টপকে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৫ অক্টোবর রাতে নয়নকে গ্রেফতার করা হয়। পরে নয়ন আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন। প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার ও আব্দুর রশিদ, সহকারী পুলিশ সুপার তানভির আহমেদ, শিবগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রউফসহ অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।