রাজধানীর সাথে বরিশালসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে বিপ্লব এনেছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। যুগ যুগ ধরে চলা ভোগান্তির অবসানে হাসি ফুটেছে কোটি মানুষের মুখে। ঈদকে কেন্দ্র করে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সেতু হয়ে স্বাচ্ছন্দ্য আর নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি সাধারণ যাত্রীরা।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাতায়াতের সময় কমে যাওয়ায় এখন সড়কপথে ঝুঁকেছেন মানুষ। তারা লঞ্চে না উঠে পদ্মা সেতু পার হয়ে চলে যাচ্ছেন ঢাকায়। সড়ক যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে কুরবানির ঈদেও। বহু বছরের ঐতিহ্য ভেঙে লঞ্চ এড়িয়ে এবার সড়কপথেই বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণের মানুষ।
পরিবহন চালকেরা বলছেন, এবার ঈদে বাড়ি ফিরতে নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে যাত্রীদের। ঢাকা থেকে গাড়ি উঠলে একেবারে গন্তব্যে গিয়ে নামতে পারছেন তাঁরা। আগে বাড়ি
ফিরতে যানজটে পড়ে চার-পাঁচ ঘণ্টা ব্যয় হতো। এখন মাত্র দু-তিন ঘণ্টা লাগছে গন্তব্য অনুযায়ী।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, এবার বাড়ি ফিরতে কোনো তাড়া নেই। ঢাকা থেকে গাড়িতে উঠলেই বাড়ি পৌঁছানো যাচ্ছেন। নেই নৌপথের কোনো ভোগান্তি। রাত হলেও কোনো সমস্যা থাকছে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে লঞ্চ-ফেরিতে ওঠার দুর্ভোগ নেই।’
পাঁচ্চরের যাত্রী জহিরুল ইসলাম বলেন,পদ্মা সেতু ঢাকার সাথে আমাদের যোগাযোগের চিত্র আমূল বদলে দিয়েছে। বাড়িতে যেতে এখন মাত্র এক ঘণ্টা পনের-বিশ মিনিট
লাগছে! ভোরে রওনা দিয়ে সকালে বাড়ি ফিরে নাস্তা করা যায় এখন।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদে আনন্দ করার জন্য বাড়িতে রওয়ানা হয়ে ফেরিঘাটে সীমাহীন কষ্ট পোহাইতে হতো। পরিবার নিয়া এলে ছোট বাচ্চারা খুব কষ্ট করতো। ঢাকা থেকে বাসে উঠছি, বরিশাল যাবো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে নদী পারাপার এখন তো কয়েক মিনিটের ব্যাপার।’
শিবচর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এবারের ঈদ যাত্রায় নৌপথের কোনো ভোগান্তি নেই যাত্রীদের। প্রথমবারের মতো
এবারের ঈদযাত্রা হবে অন্য রকম আনন্দের। মহাসড়কে যেন ঘরমুখী মানুষের কোনো দুর্ভোগ না হয়, সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। ঈদের পর সাত দিন পর্যন্ত এ
বিশেষ কার্যক্রম থাকবে। যাতে করে ফিরতি পথেও যাত্রীদের কোনো ভোগান্তি না হয়।’