মৌলিক অধিকার বা প্রয়োজনের তাগিদে যদি কখনো কোনো সরকারি দপ্তরের দ্বারস্থ হয়ে জানতে পারেন আপনি মারা গেছেন, তা হলে অনুভূতিটা কেমন হবে?
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন প্রায় অর্ধশত মানুষ। এদের মধ্যে একজন শিক্ষক সালমা আক্তার (৩৬)। তিনি করোনার টিকা নিয়ে গিয়ে জানতে পারেন তিনি মারা গেছেন। এতে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হন ওই শিক্ষিকা।
শুধু সালমা নয়, ইউপি নির্বাচনে উপজেলার আলীপুরা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড থেকে সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিতে গিয়ে মো. নজরুল ইসলাম নামে সাবেক এক যুবলীগ নেতা জানতে পারেন তিনি আর বেঁচে নেই।
তাই তিনি আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানান উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা। সালমা আর নজরুলসহ বেঁচে থেকে সরকারি হিসাবে মৃত হওয়ায় বিপাকে পড়েন ৪৮ ভুক্তভোগী।
পরে দীর্ঘদিন অফিসপাড়ায় ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে ভোটার তালিকায় জীবিত হন তারা। প্রতিনিয়ত নিজেদের জীবিত প্রমাণে বহুবার তাদের ঘুরতে হয় নির্বাচন অফিস থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরে।
জীবিত থাকার পরও মৃত হওয়ায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীনও হন তারা। বঞ্চিত হন রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে। অনেকে সরকারি বেতন বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপনও করেছেন।
এসব মৃতদের পর্যায়ক্রমে জীবিত করতে নির্বাচন অফিসের কর্তাদের সময় লাগে আট মাস। গত বছরের নভেম্বর মাসে শেষ হয় ভুল সংশোধনের কাজ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালের দিকে ভোটার তথ্য হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দিয়ে ওই সব ব্যক্তিকে মৃত দেখান তথ্য সংগ্রহকারীরা।
আর তা যাচাই-বাছাই ছাড়াই তাতে সই-স্বাক্ষর করে দেন ভোটার তথ্য হালনাগাদে দায়িত্বে থাকা শনাক্তকারী ও সুপারভাইজাররা।
ভোটার তালিকায় মৃত হওয়া মো. নজরুল ইসলাম জানান, ভোটার তথ্য হালনাগাদের সময় ভুল তথ্য দিয়ে তাকে মৃত দেখানো হয়েছিল।
এতে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, ৪৭ ব্যক্তির আবেদন সংশোধন করা হয়েছে। তাদের ভোটার আইডি সংশোধন করে জীবিত করে দেওয়া হয়েছে।