শুক্রবার, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
ছাত্রলীগ নিষিদ্ধে ঢাবিতে আনন্দ মিছিল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে উপকূলীয় ১৪ জেলা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলায় গ্রেফতার ২৬ জনই ছাত্রলীগের সাথে জড়িত : ডিএমপি রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে জরুরি আন্তর্জাতিক সম্মেলন চান ড. ইউনূস নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীরা সরকারি চাকরি পাবেন না : ক্রীড়া উপদেষ্টা ভারতে যেখানে আছেন শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উপকূলে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা নাজিরপুরে সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউলসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা পবিপ্রবিতে বিগত দিনের দুর্নীতি-অনিয়ম তদন্তে ৪৯ সদস্যের কমিশন গঠন ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বিপৎসীমার ওপরে কীর্তনখোলার পানি

নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় না এলপিজি সিলিন্ডার

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৫৪ বার পঠিত

সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নতুন করে নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম এক হাজার ৪৯৮ টাকা। কিন্তু দেশের অধিকাংশ এলাকায় দুই থেকে তিনশ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলপিজি সিলিন্ডারের ডিলার ও দোকানদাররা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরের বাসিন্দা কাজি রাকিবুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে ১২ কেজির সিলিন্ডারের সরকার নির্ধারিত দাম ছিল এক হাজার ২৩২ টাকা। কিন্তু কিনতে হয়েছে ১৪শ টাকায়। বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য দিতে হয়েছে আরও ৫০ টাকা।
মুন্সীগঞ্জের ভবের চরের বাসিন্দা দাদন হোসেন বলেন, সরকার নির্ধারিত দাম যখন এক হাজার ২৩২ টাকা ছিল, তখন তিনি ১৫শ টাকা দিয়ে সিলিন্ডার কিনেছেন। দাদন হোসেন বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দাম আমরা জানি। তবে কোনো দোকানদার সেই দামে বিক্রি করেন না। এসব নিয়ে অভিযোগ দিয়েও লাভ নেই। অযথা ঝামেলা হয়। দোকানদারদের শত্রু হতে হয়। এমনকি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে গ্যাস না পাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।’

শুধু নারায়ণগঞ্জ বা মুন্সীগঞ্জ নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সরকার নির্ধারিত দামে কেউ সিলিন্ডার বিক্রি করছেন না। অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। কোথাও দাম বেশি রাখলে তা দেখভালের দায়িত্বও কমিশনের। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসন বা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করা আছে। কেউ দাম বেশি রাখলে তারা ব্যবস্থা নেবে।

বিইআরসি নির্ধারিত ফেব্রুয়ারি মাসের দাম অনুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম হওয়ার কথা ১৪৯৮ টাকা। বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। ১২ কেজির চেয়ে বড় সিলিন্ডারের দামও নেওয়া হচ্ছে বেশি। খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে দামের এ তারতম্য পাওয়া গেছে।

২০১৩ সাল থেকে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। মূলত এরপর থেকে এলপি গ্যাসের চাহিদা বাড়তে থাকে। আগে এলপি গ্যাস কোম্পানিগুলো নিজেরাই দাম নির্ধারণ করত। গত ১০ মাস ধরে বিইআরসি প্রতি মাসের শুরুতে দাম নির্ধারণ করে দেয়। আর প্রতিবারই কমিশনের কাছে বেশি দাম রাখার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জবাবে কমিশন প্রায় একই কথা বলে- অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কমিশনের নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক এক সদস্য আমাদের সময়কে বলেন, ‘এলপি গ্যাসের দাম কমিশন ঠিক করে দেয়। কিন্তু কেউ বেশি দাম নিলে কমিশন কিছু করতে পারে না। কারণ কমিশনের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। জেলা প্রশাসক বা স্থানীয় প্রশাসন এগুলো নজরদারি করার কথা। তবে বাস্তবতা হলো, স্থানীয় প্রশাসন নানা কাজে এত ব্যস্ত যে তারা এতে গুরুত্ব দেয় না।’

এলপি গ্যাসের বাজার পুরোটাই প্রায় বেসরকারি মালিকদের নিয়ন্ত্রণে। চাহিদার ৯৮ শতাংশই তারা সরবরাহ করে। সরকারি এলপি গ্যাস কোম্পানির কাছে মেলে দুই শতাংশ।

অতিরিক্ত দামে এলপি গ্যাস বিক্রির প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনও। এলপি গ্যাস উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারী এবং ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কয়েক মাস আগে মতবিনিময় সভায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এএইচএম সফিকুজ্জামান।

খুচরা বিক্রেতাদের ভাষ্য, তারা চাহিদা অনুযায়ী কোনো কোম্পানির কাছ থেকেই সিলিন্ডার পাচ্ছেন না। অনেক কোম্পানি সরবরাহ একদম বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু কোম্পানি সরবরাহ করলেও দাম বেশি নিচ্ছে। এ কারণে খুচরায় দাম বেড়ে যাচ্ছে।

২০০৮ সালে দেশে এলপি গ্যাস ব্যবহার হয় ৫০ হাজার টন। ২০২০ সালে তা বেড়ে এক লাখ ২০ হাজার টনে দাঁড়ায়। বর্তমানে মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ১১ শতাংশ বা ৩৮ লাখ পরিবার এলপিজি ব্যবহার করে। পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করে ১৩ শতাংশ পরিবার।

বসুন্ধরা, যমুনা, বেক্সিমকো, ওরিয়নসহ বর্তমানে ২৯টি সরকারি-বেসরকারি কোম্পানি এলপিজি সরবরাহ করে। ডিলারের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। আমদানিকারী অপারেটর ২০টি এবং এলপিজি আমদানি টার্মিনাল রয়েছে ১৪টি।

অনেকেই মনে করেন, এলপিজির দাম বাড়ায় দেশে অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে গ্যাসের ব্যবহার বাড়ছে। রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলোয় তিতাস গ্যাস অফিসের কিছু কর্মীর সহায়তায় অনেকে বাসাবাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিচ্ছেন। এসব বাসাবাড়ি থেকে নিয়মিত বিলও আদায় করছে তিতাসের অসাধু কর্মকর্তারা।

অনেক বাড়ির মালিকের ভাষ্য, ভাড়াটিয়ারা সাধারণত পাইপলাইনে গ্যাসের সংযোগ থাকা বাসা বেশি পছন্দ করেন। ফলে অনেক বাড়িওয়ালা অবৈধ সংযোগ নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com