আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি কৃষি। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে অর্থাৎ বাংলার প্রতিটি মানুষ সুখেশান্তিতে বাঁচতে পারবে। কৃষকের জন্য কৃষি উৎপাদননির্ভরে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিতে বেশ সাফল্য রয়েছে। অথচ কৃষকের দুরবস্থা যেন দিন দিন বাড়ছে।
দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ায়, সর্বশেষ গত ১২ জানুয়ারি নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ায় সরকার। আবাসিক গ্রাহক ছাড়াও বেড়েছে সব ধরনের বিদ্যুতের দাম। ফলে কৃষি উৎপাদনে খরচ বাড়বে, যা কৃষি উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে। ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সেচ মৌসুমের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এই সময়ে প্রচণ্ড গরম পড়ে, বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সর্বোচ্চ। জ্বালানি সংকটে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া অতিরিক্ত গরমের কারণে যন্ত্রাংশ গরম হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধও রাখতে হয়। ফলে সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আর এবার সেই চ্যালেঞ্জ বাড়িয়ে দেবে বিদ্যুতের বাড়তি দাম। আবাসিক গ্রাহক ছাড়াও বেড়েছে সব ধরনের বিদ্যুতের দাম। ফলে কৃষি উৎপাদনে খরচ বাড়বে, যা কৃষি উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে। এমনিতেই নানা উপকরণের দাম বাড়ায় কৃষক ফসল উৎপাদনে উৎসাহ হারাচ্ছেন। এ অবস্থায় সেচকাজে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন কৃষকের জন্য আলাদা ভাবা দরকার। তাদের এখন দরকার নগদ আর্থিক সহায়তা। বিদ্যুতের দাম যখন বাড়ে, তখন অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আরও চাপে থাকে কৃষক।
এতে কৃষি খাতসংশ্লিষ্টদের ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের অবদান, উৎপাদিত ধানের প্রকৃত মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। আমার চাই কৃষক বাঁচাতে সবাইকে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। কৃষককে বাঁচাতে হলে সরকারের সুদৃষ্টির বিকল্প নেই। সরকার জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয় গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তাই দেশের কৃষি খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে এমন যে কোনো প্রবণতা রোধে সংশ্লিষ্টরা কার্যকর উদ্যোগ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।