কথা সাহিত্যিক শাখাওয়াৎ নয়নের সাথে নিউইয়র্কে প্রাণবন্ত সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করা হয়। গত ৭ জুলাই রবিবার বিকেলে নিউইয়র্কের উডসাইডের ‘দেশি কুজিন’ রেষ্টুরেন্টের পার্টি হলে এই আড্ডার আয়োজন করে- বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব যুক্তরাষ্ট্র। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন এই সময়ের বিশিষ্ট কবি আসাদ মান্নান।
লেখক ও সম্পাদক আবু সাঈদ রতনের সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। দুই অতিথিকে পুষ্প দিয়ে বরণ করেন কবি আনোয়ার সেলিম ও অনুবাদক রওশন হাসান। বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের আহ্বায়ক কবি মিশুক সেলিম, কথা সাহিত্যিক শাখাওয়াৎ নয়ন, কবি আসাদ মান্নান ও কবি ফকির ইলিয়াসকে নিয়ে মূলমঞ্চে আড্ডার সূচনা করেন। আড্ডায় মূখ্য সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন কবি ফকির ইলিয়াস।
শুরুতেই শাখাওয়াৎ নয়নের সদ্য প্রকাশিত উপন্যাস ‘বোহেমিয়ান’ নিয়ে লিখিত আলোচনা পাঠ করেন কবি সৈয়দ মামুনুর রশীদ। ভূমিকা বক্তব্যের পর প্রথমেই ফকির ইলিয়াস, শাখাওয়াৎ নয়নের কাছে জানতে চান, আপনাকে লেখক হতে হলো কেন? উত্তরে শাখাওয়াৎ নয়ন বলেন, আমি অনেক লেখকের লেখা পাঠ করার পর মনে হয়েছে, আমার কিছু বলা দরকার। আমারও বলার কিছু কথা আছে। তা বলতেই আমি লেখালেখিকে আমার বলার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছি। আড্ডায় বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এই কথা সাহিত্যিক। তিনি বলেন, আমিও জীবনের মার্বেল খেলছি। তা গন্তব্যে পৌঁছুতে পারবে কী না-তা আমার জানা নেই।
অনুবাদ ও সাহিত্যের অর্থনীতি বিষয়ে কবি আসাদ মান্নান বলেন, আমাদের লেখা অনূদিত হয়ে বিভিন্ন ভাষায় ছড়িয়ে পড়ুক- এটা আমরা চাই। এই প্রজন্মের যারা ইংরেজীতে দক্ষ তারা এগিয়ে আসবেন,বাংলা সাহিত্য দ্যুতি ছড়াবে এমন আশাবাদ আমি রেখেই যাচ্ছি।
আড্ডায় শাখাওয়াৎ নয়নের ছোটগল্প ‘একজন হৃদয়বতী’ খুব চমৎকারভাবে পাঠ করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ও সংগঠক গোপন সাহা। তার পাঠ, সকলের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আলোচনায় অংশ নিয়ে গবেষক ও প্রাবন্ধিক আহমাদ মাযহার বলেন, শাখাওয়াৎ নয়ন প্রস্তুতি নিয়ে আসা লেখক। তার লেখা পড়লেই বুঝা যায় তিনি ব্যাপক পঠন-পাঠন সেরেই লেখালেখিতে এসেছেন।
বিশিষ্ট চিন্তক ও লেখক ড. আবেদীন কাদের বলেন, বাংলাদেশের একটি গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে যিনি লেখালেখি করেন, তিনিও ঢাকার অভিবাসী। তাই নয় কি ! তাহলে শাখাওয়াৎ নয়ন সিডনিতে থাকেন, না নিউইয়র্কে থাকেন- সেটা তো কোনো বিষয় নয়। তিনি বলেন, লেখক তার পাঠকের কাছে পৌঁছুতে পারলেই তিনি স্বার্থক।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কবি ফারহানা ইলিয়াস তুলি ও শিশু সাহিত্যিক অনীলা পারভীন। আড্ডায় প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন, লেখক-গীতিকার ইশতিয়াক রুপু ও ডা. হাসান। অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কবি শামস আল মমীন, কবি এবিএম সালেহউদ্দিন, সংগঠক মোশাররফ হোসেন, কবি আহমেদ ছহুল, কবি সৈয়দ আহমদ জুয়েদ, কবি সালেম সুলেরী, কবি স্বপ্ন কুমার, ছড়াকার আলম সিদ্দিকী, এ্যাক্টিভিস্ট ও শিল্পী সুতপা মন্ডল, কবি সুরীত বড়ুয়া প্রমুখ। দেশি কুজিনের স্পনসরে এই মনোগ্রাহী আয়োজনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জাকী। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান এই আয়োজন সফল করার জন্য। সমাপনী বক্তব্যে কবি আসাদ মান্নান নিউইয়র্কের মতো জায়গায় এমন আয়োজনের
জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। শাখাওয়াৎ নয়ন এমন চমৎকার আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আয়োজকদের প্রতি।