বুধবার, ১১:৩৯ অপরাহ্ন, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

নাইকো মামলা : নথি দেখে দেখে সাক্ষ্য নেয়া বন্ধে হাইকোর্টে আবেদন খালেদা জিয়ার

সময়ের কণ্ঠধ্বনি
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৩৭ বার পঠিত

নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতে নথি দেখে দেখে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়া বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

রোববার (৮ অক্টোবর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘দেখে দেখে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে, যা ফৌজদারি আইনগতভাবে বৈধ না। নিয়ম হচ্ছে মেমোরি রিফ্রেশের জন্য সাক্ষ্য দেয়ার সময় সাক্ষী দু-একবার চোখ বোলাতে পারেন। কিন্তু এভাবে লাগাতার দেখে দেখে বইয়ের মতো পড়ে পড়ে সাক্ষ্য দেয়া আইনসিদ্ধ নয়। আমরা মনে করছি, এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ করছেন, তিনি সেখানে গিয়ে নিজে বসে থাকছেন। এটা তার এখতিয়ারবহির্ভূত।’

কায়সার কামাল আরো বলেন, ‘নাইকো দূর্নীতি মামলা কিন্তু দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মামলা করেছে দুদক। মামলা পরিচালনা করবে দুদকের আইনজীবী। অথচ মামলা পরিচালনা করার জন্য হাজির হয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। তিনি রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল নাকি আওয়ামী লীগের? এটা ইতোপূর্বে আর কখনো ঘটেনি, এটা নজিরবিহীন।’

‘বাংলাদেশ দণ্ডবিধি এবং ফৌজদারি কার্যবিধি সাক্ষ্য আইনের কিছু বিধি-বিধান রয়েছে। কিন্তু এ মামলার ক্ষেত্রে কিছুই মানা হচ্ছে না। বরং নথি দেখে দেখে সাক্ষ্য দেয়া হচ্ছে। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যার্টনি জেনারেল এসব অবৈধ কার্যক্রমকে সাপোর্ট দেয়ার জন্যই কোর্টে বসে থাকেন। এ জন্য আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি,’ বলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

তিনি বলেন, ‘নাইকো মামলা দুদক যখন দায়ের করেছিল তখন শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া উভয়কে আসামি করা হয়েছিল। অথচ শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে শুধু বিচার করা হচ্ছে খালেদা জিয়ার। কোর্টের ওপর প্রেসার তৈরি কতরা হচ্ছে। এ কারণে নজিরবিহীনভাবে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থাপিত আদালতে অ্যার্টনি জেনারেল গিয়ে বসে থাকেন।’

খালেদা জিয়ার আবেদনটি বিচারপতি মো: সেলিম ও বিচারপতি মো: রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এর আগে, গত ১৯ মার্চ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সাথে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সংস্থাটি।

দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন।

খালেদা জিয়া ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন– বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তৎকালীন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্যসচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এর মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মৃত্যুবরণ করায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

অন্য আসামিদের মধ্যে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন বর্তমানে কারাগারে আছেন। নাইকো রিসোর্সেস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ পলাতক রয়েছেন। বাকিরা জামিনে আছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com