ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা ধর্মীয় বক্তা মুফতি কাজী ইব্রাহীমকে ১ বছর ৩ মাস ১৯ দিনের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।
ওই ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম জানান, সোমবার মামলাটি চার্জগঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন কারাগার থেকে আসামি কাজী ইব্রাহীমকে হাজির করা হয়। শুনানির সময় তিনি স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করেন। তখন বিচারক ওই দোষ স্বীকারের ভিত্তিতে আসামিকে তার হাজতবাসকালীন ১ বছর ৩ মাস ১৯ দিনের কারাদণ্ডের রায় দেন।
২০২১ সালের গত ২৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডের তার বাসা ঘেরাও করলে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে হিন্দুস্থানের দালাল ও র-এর এজেন্ট বাড়ি ঘিরে ফেলেছেন মর্মে প্রচার করেন। এরপর তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে নানা বক্তব্য দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করে ডিবি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার পর ওই বছর ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে জেড এম রানা নামে একজন একটি স্কুলের টাকা আত্মসাৎ, চাঁদা দাবি এবং প্রতারণার অভিযোগে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ওই রিমান্ড শেষে ২০২১ সালের ২ অক্টোবর তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত। এরপর থেতে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।
সম্প্রতি ওয়াজ মাহফিল, ইউটিউব, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে মুফতি কাজী ইব্রাহিম নানান বক্তব্য দিয়ে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। তার সমালোচিত মতবাদের মধ্যে একটি হলো- করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার কারণে নারীর দাড়ি গজাচ্ছে, পুরুষের কণ্ঠ পাল্টে নারীকণ্ঠ হচ্ছে।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের বরাত দিয়ে এ বক্তব্যে তিনি বলেন, করোনা ভ্যাকসিন নিয়েও বিতর্ক আছে। আরেক বক্তৃতায় করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের গাণিতিক ‘সূত্র’ও দিয়েছিলেন তিনি! এক প্রবাসী ‘স্বপ্নে’ ওই সূত্র পেয়েছেন, তিনিই তাকে বিষয়টি বলেছেন বলে জানান। তার এমন বক্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বহু হাস্যরস তৈরি হয়।
এ ছাড়াও তিনি জুমার খুতবায় বিভিন্ন সময় করোনার চিকিৎসা, করোনায় মুসলিমরা আক্রান্ত হবে না, পৃথিবীর সৃষ্টি ও ভৌগোলিক বিভিন্ন বিষয়ে মতবাদ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রল হয়েছেন।