জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ডেকেছে বিএনপি। রোববার দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হবে। এতে বক্তব্য রাখবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সংবাদ সম্মেলনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, পুলিশের সাড়াশি অভিযান এবং ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের স্থান নিয়ে কথা বলবেন বিএনপি মহাসচিব।
উল্লেখ্য, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশই করতে চায় বিএনপি। রাজধানীতে বিপুল লোক সমাগম করে ‘টানা অবস্থান’ নেয়ার যে কথা রাজনীতিতে কিংবা আওয়ামী শিবিরে আলোচিত হচ্ছে, সে ধরনের কোনো চিন্তা দলটির নেই বলে সুস্পষ্টভাবে জানা গেছে। তবে শহরের এন্ট্রি পয়েন্টগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাধা দেয়া হলে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় নির্বাচন ইস্যুতে কোনো সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত নানামুখী আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি। বিভাগীয় সমাবেশগুলোর মধ্য দিয়ে তৃণমূলে নেতাকর্মীদের মধ্যে যে ‘আন্দোলন স্পৃহা’ তৈরি হচ্ছে, সেটিকে কাজে লাগিয়েই চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছতে চায় তারা। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় কর্মসূচি শেষ হলেও, এরপর দলটি আবারো নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। যেটিকে বলা হচ্ছে তৃতীয় ধাপের আন্দোলন কিংবা সরকারবিরোধী সব দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন।
গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। ইতোমধ্যে সবকয়টি বিভাগে সমাবেশ শেষ হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি সমাবেশেই বিএনপিকে প্রতিকূলতার বাধা ডিঙ্গাতে হয়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বাস ও লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ছোট-খাটো পরিবহনও ছিল কড়াকড়ির আওতায়। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের সশস্ত্র মহড়া ও হামলাও ছিল সমানতালে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের এসব প্রতিকূলতা পেরিয়েই প্রতিটি সমাবেশে যোগ দিতে দেখা গেছে। এসব কর্মসূচিতে উপস্থিতিও ছিল বেশ লক্ষণীয়।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের আগে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চায় বিএনপি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দলীয় সংসদ সদস্যদের জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ ও যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করা।
বর্তমান সংসদে বিএনপির সাতজন এমপি আছেন। জানা গেছে, দল নির্দেশনা দিলেই তারা পদত্যাগ করবেন। তবে এই নির্দেশনা ১০ ডিসেম্বরের আগে আসবে কি-না সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।
বিএনপির নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেছেন, যেহেতু তাদের দাবির মধ্যে সংসদ বিলুপ্তির বিষয়টিও রয়েছে। সেক্ষেত্রে আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে কিংবা কোনো ধরনের আপস করা হবে না সেটি বুঝাতেই সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করবেন। সময়মতো সেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ দিকে সরকারবিরোধী দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় দফা সংলাপ চলছে বিএনপির। ১০ ডিসেম্বরের আগেই এই সংলাপ শেষ করে যুগপৎ আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় দফা সংলাপে চেষ্টা চলছে যুগপৎ আন্দোলনের দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট করা। তবে দলগুলোর মুখ্য দাবি হচ্ছে, তত্ত্বাবধায়ক কিংবা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন।