দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঠিকমতো কাজ করলে দুর্নীতি এত বাড়ত না বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার কারাগারে ডাক্তার নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মাদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
দেশে দুর্নীতির আলোচিত খাত স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশেষ করে করোনা মহামারীর সময় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিল স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি।
আজ শুনানিতে ‘স্বাস্থ্য খাতের সর্বস্তরে দুর্নীতি বিস্তার করছে’ বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
এসময় আদালত বলেন, ‘দুদক ঠিকমতো কাজ করলে এত দুর্নীতি বাড়ত না। প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করার পরও পাকিস্তান-ব্রিটিশ আমলাতন্ত্রের পরিবর্তন হচ্ছে না। যে সরকারই আসুক আমলারা সব সময় থাকে। তারা কেন দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়?’
কারা কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘উই আর সন অব দ্য সয়েল। আমরা সবই জানি, আমাদের ভুল বোঝাবেন না।’
বিচারক এ সময় ‘বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে’ গিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘বাইরের অনেক দেশের ছোট হাসপাতালের অবস্থা এখানকার চেয়ে ভালো। আখেরাতে বিশ্বাস করলে দুর্নীতি করতে পারতেন না। আর কত দুর্নীতি করবেন। দুর্নীতির একটা সীমা থাকা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রীর এলাকা ফরিদপুর মেডিক্যালেও দুর্নীতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেন, ‘কারাগারে অনেক নিরীহ মানুষ থাকে। তাই মানুষ শাস্তি পেলে ক্ষমা পাবেন না। ডাক্তাররা সবাই ঢাকায় থাকতে চায়। প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে, কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে যোগসাজশ করে ওষুধ লেখে।’
বিএমডিসি প্যারামেডিক্যালের চিকিৎসকদের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ লেখার অনুমতি কেন দিয়েছে- সে প্রশ্নও তোলেন হাইকোর্ট।
রিটকারী আইনজীবী জে আর খান রবিন বলেন, কারা অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে এরই মধ্যে ১২৫ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং ডাক্তার নিয়োগে খসড়া নীতিমালা চূড়ান্তের পর্যায়ে রয়েছে। পরে আদালত ১৬টি পদ শূন্য পদে নিয়োগ সম্পন্ন এবং খসড়া নীতিমালা চূড়ান্ত করার বিষয়ে ৬ জুনের মধ্যে জানাতে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে কারাবন্দিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালে রিট করেন আইনজীবী মো: জে আর খান রবিন। পরবর্তীতে কয়েক দফায় শুনানি শেষে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।