বৃহস্পতিবার, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ঠা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
  • ২৭ বার পঠিত

২০২৪ সালের এপ্রিলে পাকিস্তান থেকে ফিলিপাইন পর্যন্ত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চলগুলো চরম তাপ অনুভব করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে এই চরম তাপপ্রবাহ মানব স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা থেকে শুরু করে অর্থনীতি এবং শিক্ষা পর্যন্ত সবকিছুকে প্রভাবিত করেছে।ভারত, বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইনের অনেক পড়ুয়াকে প্রচণ্ড তাপ থেকে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে কয়েকদিন স্কুলে না এসে বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে। ভারতের নির্বাচনে মধ্যে এই তাপপ্রবাহ একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ এপ্রিল তাপমাত্রা ৪৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গেলে বাংলাদেশ সেই সপ্তাহের জন্য সমস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। একবার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে চলে গেলে সেটি মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা (প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ছাড়িয়ে যায় এবং হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এই কারণেই গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশে চরম তাপ মরুভূমিতে একই তাপমাত্রার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। এপ্রিল এবং মে মাসে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ পর্যন্ত কয়েক মিলিয়ন মানুষ এই ধরনের স্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হয়েছে এবং এই চরম তাপ শ্রম উৎপাদনশীলতাকে যথেষ্টভাবে প্রভাবিত করেছে।

কিভাবে এত গরম বাড়লো
চরম তাপ বিভিন্ন প্রক্রিয়া দ্বারা চালিত হয়, যা বিশ্বব্যাপী থেকে স্থানীয় পরিসর পর্যন্ত কাজ করে। স্থানীয় পর্যায়ে কম গাছপালা এবং মাটির আর্দ্রতা বেশি তাপের জন্ম দেয়। কংক্রিট এবং অ্যাসফল্টের শহরগুলো আশেপাশের গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি গরম। অন্যান্য স্থানীয় এবং আঞ্চলিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বাতাস এবং মেঘ তৈরি হওয়ার পর্যাপ্ত পরিস্থিতি  সেখানে রয়েছে কিনা।

তারপরে আরও বৈশ্বিক কারণ রয়েছে: এল নিনো এবং অবশ্যই গ্লোবাল ওয়ার্মিং। এল নিনো গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে তাপমাত্রা ওঠানামার উষ্ণ পর্যায়কে বোঝায় (এর বিপরীত দিক হলো লা নিনা)। প্রশান্ত মহাসাগর ২০২৩ সালের মে মাস থেকে এল নিনোর পর্যায়ে রয়েছে, যা অতিরিক্ত তাপ মুক্ত করে এবং অনেক অঞ্চলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। 

এশিয়ার কিছু অংশে এর ফলে চরম উত্তাপের সময়কাল আরও দীর্ঘ হয়েছে। এটি বিশেষ করে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক শহরের জন্য বিপজ্জনক। গত ৮৫ বছরে ইতিমধ্যেই এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা অত্যধিক হারে বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন টিমের বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহকে ‘অসহনীয়’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

কী পদক্ষেপ প্রয়োজন
এপ্রিল এবং মে সাধারণত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উষ্ণতম মাস। গ্রীণহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সুস্পষ্ট বৈশ্বিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তাপ কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে, যা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে নির্দিষ্ট জলবায়ু, জনস্বাস্থ্য এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তৈরি করা দরকার। সিঙ্গাপুরে যে তাপ কর্ম পরিকল্পনা কাজ করে তা ভারতের শুষ্ক এবং আরও গ্রামীণ অংশে উপযুক্ত নাও হতে পারে। আমাদের জনসংখ্যা এবং সম্পদের তথ্যের সাথে পরিবেশগত বিপদগুলিকে একত্রিত করতে হবে কার্যকর ঝুঁকি মূল্যায়নের জন্য। বিভিন্ন স্তরের চরম উত্তাপের জন্য দক্ষ তাপমাত্রা প্রশমন ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।

দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশ তাদের তাপ কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রগতি করছে। তবে এ বিষয়ে আরো উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রয়োজন। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বিপর্যয়কর তাপমাত্রা আরো তীব্র হয়ে উঠবে।

সূত্র : theconversation

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com