কর্ণফুলীর তলদেশে নিমার্ণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ডিসেম্বরেই খুলে দেওয়ার তাগাদা রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আর এ লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে কাজ। চলতি মাসে টানেলের কাজ ৯২ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৮ শতাংশ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে দিন-রাত কাজ চলছে। ক্রস প্যাসেজ নির্মাণ এবং টানেল সংশ্লিষ্ট টোল প্লাজার নির্মাণ কাজও শেষের পথে।
এদিকে টানেল দিয়ে যেসব যানবাহন চলাচল করবে সেগুলোতে যৌক্তিক টোল নির্ধারণের জন্য একটি কমিটি কাজ করছে। কমিটিকে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
টানেল প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশীদ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি ডিসেম্বরে নির্ধারতি সময়ের মধ্যেই টানেলের কাজ শেষ করার। সরকারের পক্ষ থেকেও তাগাদা রয়েছে। বর্তমানে টানেলের কাজ ‘ওভার অল ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে বলা যায়। বাকি কাজ ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। তবে টানেল কখন উদ্বোধন হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।’
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টানেলটি নির্মাণ হচ্ছে। নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল এটি। কর্ণফুলীর দুই তীরকে সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের কাজ উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। ২ শতাংশ হার সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে এই ব্যাংক। বাকি ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
সেতু কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানিয়েছে, টানেলে যান্ত্রিক, বৈদ্যুতিক ও পুরকৌশল কাজ প্রায় শেষের পথে। চলছে টোল প্লাজা নির্মাণের কাজ। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস ডিসেম্বরের মধ্যেই টানেল খুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে সেতু কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিয়েছেন। একইসঙ্গে টোলের হার নির্ধারণে যে কমিটি কাজ করছে সেই কমিটি কতটুকু কী করল তার একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। মুখ্য সচিব শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন।