শুক্রবার, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ডলার কারসাজির অভিযোগে ৬ ব্যাংকের এমডিকে শোকজ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২
  • ৭০ বার পঠিত

ডলার কারসাজির মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করার অভিযোগে এবার ছয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) শোকজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি-প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। ব্যাংক ছয়টি হলো- ডাচ বাংলা ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক ও বিদেশী স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। গতকাল ব্যাংকগুলোর নির্বাহীপ্রধানকে এ চিঠি দেয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওই সূত্র জানিয়েছে, আরো প্রায় এক ডজন ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির আওতায় আনা হচ্ছে। এ জন্য সব ব্যাংকের কাছে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে নিজেদের কাছে ডলার রেখে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করার অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোতে জরুরি বিশেষ পরিদর্শন করা হয়। ওই পরিদর্শনে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা কারসাজির তথ্য পাওয়া যায়। এরই ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকগুলো নিজেদের কাছে ডলার মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করেছিল। এর পর থেকেই ডলারের সঙ্কট দেখা দেয়। এ সঙ্কটের মধ্যে ব্যাংকগুলো বাড়তি মূল্যে ডলার বিক্রি করে বিপুল অঙ্কের মুনাফা করে, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনৈতিক ও গর্হিত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করছে। এরই ভিত্তিতে গত সপ্তাহে ছয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন করা হয় ব্যাংকগুলোর এমন ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা লঙ্ঘন করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী দায়ী ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরও হুঁশিয়ারি দেয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য ছয়টি ব্যাংক তাদের ট্রেজারি প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তবে প্রতিটি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, আলোচ্য ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী বা এমডিদের নির্দেশনা ও সম্মতি ছাড়া ট্রেজারি প্রধানরা নিজেরা এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। এ কারণে ট্রেজারি প্রধানদের মতো ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরাও কম দায়ী নন। এ কারণেই ট্রেজারি প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।

প্রায় এক সপ্তাহে আগে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রায় এক সপ্তাহ অপেক্ষা করা হয়। এ সময় আরো নিবিড়ভাবে ব্যাংকগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে এমন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করে যা ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরা খণ্ডন করতে পারবেন না। অবশেষে গতকাল ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীকে শোকজ করার চিঠি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশকে জিম্মি করে অতি মুনাফা করা গর্হিত অপরাধ। কম মূল্যে ডলার কিনে মজুদ করে বেশি মূল্যে বিক্রি করে ব্যাংকগুলো মুনাফা করেছে ঠিকই, কিন্তু বাজার ও দেশকে অস্থিতিশীল করা হয়েছিল। এ কারণে ব্যাংকে ক্যাশ ডলারের দাম ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার আবার স্থিতিশীল হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। গতকাল খোলাবাজারে প্রতি ডলার পেতে ১০৫ টাকা থেকে ১১০ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকের নগদ ডলারের দামও কমে এসেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো: সিরাজুল ইসলাম গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ডলার কারসাজির দায়ে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আরো বেশ কয়েকটি ব্যাংককে তদারকির আওতায় আনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে শিগগিরই ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com