সোমবার, ০৪:৫০ অপরাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ঠাণ্ডায় দাঁতে দাঁত লেগে যাচ্ছে

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৩২ বার পঠিত

– সবনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস
– কাল থেকে শীত কমার সম্ভাবনা

ঠাণ্ডার মাত্রা এত বেশি যে দাঁতে দাঁত লেগে যাচ্ছে। আজ সোমবারও দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডাসহ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ কারণে শীত নিবারণে সবার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়ে রাখার জন্য বলছেন আবহাওয়াবিদরা। দেশের বেশির ভাগ মানুষের প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় রাতে ঘুম আসছে না। সারারাত তীব্র শীতের সাথে লড়াইয়ের পর সকালে আর ঘুম থেকে উঠতেই মন চায় না। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে পানিতে হাত লাগলে হাত অবশ্য হয়ে যাওয়ার অবস্থা। ঠাণ্ডার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায়ও ব্যাঘাত ঘটছে। শীতের কারণে ঐচ্ছিক কাজগুলো প্রায় বন্ধ হতে চলেছে, কারণ ঐচ্ছিক কাজের চাপ থাকে না। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ সোমবার সকালের প্রচণ্ড শীত থাকলেও দুপুর থেকে তাপমাত্রার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সামনের কয়েকদিন শীতের উন্নতি হতে পারে এবং আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে দেশের কিছু অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, দেশের মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে। গতকাল দেশের এই দুই অঞ্চল মাঝারী থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায়। ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন দেশের সর্ব উত্তরের এই এলাকায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। চলতি শীতে এত কম তাপমাত্রা দেশের আর কোথাও নামার রেকর্ড নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
আবহাওয়াবিদরা বলেছেন, চলতি জানুয়ারি মাসের পুরোটাই কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা ছিল রাত ও সকালের আকাশ। প্রায় মাসকাল ধরে মানুষ দিনের বেলা পুরো সময় সূর্যের আলো পায়নি। দুপুরের দিকে সামান্য কিছু সময় আলো পেলেও তা পরিবেশ গরম করার অবস্থায় থাকে না। ফলে বিকালে আবারো কুয়াশা এবং হিম হাওয়া বইতে থাকায় ঠাণ্ডায় ছেয়ে যাচ্ছে পুরো দেশ। এ কারণে জানুয়ারির মাস দেশ ডুবে ছিল হিম হাওয়ায়। কুয়াশা ভেজা আকাশ এবং সূর্য না উঠার সাথে সারা দেশে ছিল ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বায়ু প্রবাহ। শীতের দিনের এই গতির বায়ু প্রবাহেও শীতের মাত্রা বেড়ে যায়। তা ছাড়া জানুয়ারির এই সময়ে বাংলাদেশের আকাশের উপর দিয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার জেট স্ট্রিম বয়ে যায়। জেটস্ট্রিম অপেক্ষাকৃত নিচের দিকে নেমে আসে অনেক সময়। জেটস্ট্রিমের ঠাণ্ডা প্রবাহ উচ্চচাপের কারণে নিচে নেমে আসে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় শৈত্যপ্রবাহের সৃষ্টি করে।

গতকাল রোববার বিকেল থেকেই দেশের ৪৫ জেলায় ছিল শৈত্যপ্রবাহ। কেবলমাত্র চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে শৈত্যপ্রবাহের মাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল। এই তিন বিভাগে রয়েছে ১৯ জেলা। এই তিন বিভাগের মধ্যে সাগর উপকূলের চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলায় তাপমাত্রা দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে স্বাভাবিক ছিল। চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি, সন্দ্বীপ, সীতাকুণ্ড ও কুমিল্লা ছাড়া গতকাল রোববার এই বিভাগের অন্যান্য জেলায় বেশ আরামদায়ক তাপমাত্রা ছিল।
দেশের অন্যান্য বিভাগের চেয়ে রংপুর বিভাগের নিম্ন তাপমাত্রা অনেক কম ছিল। এই বিভাগের দিনাজপুর, সৈয়দপুর ও তেঁতুলিয়ায় ছিল তীব্র শৈত্য প্রবাহ (৫ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এ ছাড়া রংপুর বিভাগের বাকি অঞ্চলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বিরাজ করছিল। রংপুরে শীতের মাত্রা বেশি থাকার পেছনে কারণ হিসেবে আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই অঞ্চলটির পাশেই ভারতীয় পাহাড়িয়া অঞ্চল। তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্চনঝঙ্ঘা পর্বত খুবই কাছে বলে সেই অঞ্চলের হিম হাওয়া এখানে চলে আসে বলে রংপুর বিভাগে অপেক্ষাকৃত বেশি শীত পড়ে থাকে। তা ছাড়া রংপুর বিভাগটি সমুদ্র থেকে অনেক উঁচুতে। উঁচু স্থানের তাপমাত্রা অনেকটা কম থাকে।

গতকাল ঢাকায় নিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে অপেক্ষাকৃত উষ্ণ।
আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের থাকতে পারে। কুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন ব্যাহত হতে পারে। আজ রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে বয়ে যেতে পারে। তবে আজ কিছু কিছু অঞ্চল থেকে শৈত্যপ্রবাহ কমে যেতে পারে।

রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্র জানিয়েছে। আর আগের দিন শনিবার সকাল ৯টায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার তথ্যানুযায়ী- সাধারণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া দিনের তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীতে এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
রাজশাহীতে প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমলেও খোলা রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। গত ১৬ জানুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) কোনো জেলার দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস দেখে মাউশির উপপরিচালকরা দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে না ওঠা পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেবেন বলেও ওই চিঠিতে জানানো হয়। এই নির্দেশনা পাওয়ার পর গত ২১ ও ২২ জানুয়ারি রাজশাহীতে মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী। এ ছাড়া রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদুল ইসলামের নির্দেশনায় ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোও বন্ধ রাখা হয়।
মাউশির রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, স্কুল বন্ধ নিয়ে মাউশির নতুন কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই আগের চিঠির আলোকেই স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ভোরে তাপমাত্রা একটু কম থাকলেও সারা দিন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রোদ উঠে যাচ্ছে। তাপমাত্রাও বাড়ছে। তাই এতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করার কারণ নেই। ফলে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার।

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান গতকাল রোববার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। যা বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আবহাওয়া অফিসের হিসেবে এটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। গত শনিবার এখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে। এর আগে ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তারও আগে ২০১৯ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল তেঁতুলিয়ায়। তবে গতকাল রোববার সূর্যোদয়ের পরই রোদের দেখা মেলে। দিনভর ঝলমলে কড়া রোদে কমে যায় শীতের দুর্ভোগ। আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ সোমবার থেকে প্রতিদিনই রাতের তাপমাত্রা বাড়বে। এতে করে শীতের তীব্রতা কমে আসবে আর ধীরে ধীরে বিদায় নেমে শীত। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ থাকলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান স্বাভাবিকভাবেই চলেছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, রোববার গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়।
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা জানান, ২০১৯ সালের পর পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় গতকাল ২০২৪ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড। এর আগে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বের ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রের্কড হয়।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায় ২০১৩ সালে তেঁতুলিয়ায় প্রথম শ্রেণীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার অফিস উদ্বোধনের পর পঞ্চগড় জেলার নিয়মিত তাপমাত্রা রেকর্ডভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে গত ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মৃদ্যু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে পঞ্চগড় টানা ২৩ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় বিরাজমান ছিল। গতকাল রোববার সকালে ঘন কুয়াশা না থাকায় আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে। তবে সারা দিন হিমেল বাতাসে কনকনে হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হয়েছে। দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পর সূর্য উঁকি দিলেও রৌদ্রের প্রখরতা ছিল না। তীব্র শীতে সাধারণ মানুষ জবুথবু হয়ে পড়েছে। একান্তু প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হয়নি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাস কয়েক সপ্তাহজুড়ে পঞ্চগড় ও তেঁতুলিয়ায় দফায় মৃদু, মাঝারিসহ তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, চলমান শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে নীলফামারীতে। সেই সাথে উত্তরের হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এ জেলার দরিদ্র মানুষজন। ভোররাত থেকে বৃষ্টির মতো কুয়াশাপাত পড়ছে। ঘন কুয়াশার কারণে কাছের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিললেও নেই তেমন উত্তাপ। শীতের তীব্রতার কারণে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জ্বর, সর্দি ও কাশিসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, গতকাল নীলফামারীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামায় জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পঞ্চম দিনের মতো রোববারও বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত। হাড়কাঁপানো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। রোববার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একইসাথে বইছে শৈত্যপ্রবাহ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বমিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। এর আগে, সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯২ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, প্রতি বছরই শীত মৌসুম এলে মৌসুমের বেশির ভাগ সময়ই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় এবং অধিকাংশ সময় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ জেলায় রেকর্ড করা হয়।
সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা জানান, নীলফামারীতে উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘন কুয়াশায় শীতে জবুথবু নীলফামারীর সৈয়দপুরে জনজীবন, তাপমাত্রা নামল ৬ ডিগ্রিতে
সৈয়দপুরে উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু জনজীবন। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারদিক। শীতের দাপটে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

গতকাল সকালে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলিত মৌসুমে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তাপমাত্রা বিচারে এটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে নীলফামারীর তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। গতকাল সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে এটি জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
সৈয়দপুরে ১০০ শয্যার হাসপাতালে আর এম ও নাজমুল হক বলেন, কয়েক দিন থেকে শীতজনিত রোগী সংখ্যা বেড়েছে এতে শিশু-বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি।
লালপুর (নাটোর) সংবাদদাতা জানান, নাটোরের লালপুরে চলতি মৌসুমে উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। গতকাল সকাল ছয়টায় এই তাপমাত্রা রেকর্ড করে ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস। এর আগে গত ২২ জানুয়ারি এই এলাকায় সর্বনিম্ন ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকায় নাটোরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত থাকলেও গতকাল খোলা ছিল। ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান ঈশ্বরদী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীত বিরাজ করছে। এ ধরনের আবহাওয়া আরো দু-একদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com