নারায়ণগঞ্জের কিশোরগঞ্জে টেনশন গ্রুপ ও ডেভিল এক্সো গ্রুপ নামের দুটি কিশোর গ্যাংয়ের ১৭ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১১। আজ সোমবার র্যাব-১১ -এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক মেজর সানরিয়া চৌধুরী এ তথ্য জানান। এর আগে গতকাল রবিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদেরকে আগের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গ্রুপ দুটির প্রধান আপন দুই ভাই। সম্প্রতি সিদ্ধিরগঞ্জের কয়েকটি এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের ৩১ আগস্ট, ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর টেনশন গ্রুপের নেতা সীমান্ত ও তার বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এছাড়াও তারা এলাকায় উঠতি বয়সী ছাত্রদের টার্গেট করে মাদকদ্রব্য সেবনে প্ররোচিত করে তাদের গ্রুপে যোগদান করিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ওই মামলায় আসামিদের বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন- টেনশন গ্রুপের প্রধান রাইসুল ইসলাম সীমান্ত (২২), আরিফুল ইসলাম (২৬), মো. হুমায়ুন হোসেন (২৪), মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৬), মো. রাব্বি (২৫), মো. প্রিতম রোবায়েতি ইসফাক (২৯) এবং ডেভিল এক্সো গ্রুপের প্রধান মো. সারিব (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. নাঈম (১৯), মো. তুহিন হোসেন (১৮), রোসমান (১৯), মো. শাহাদৎ (১৯), মো. সৌরভ (২০), মো. মাহিন (২০), মো. তুষার (২০), মো. সৌরভ (১৯), মো. আরিফ (১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা রাস্তায় চলাচলরত সাধারণ মানুষের মালামাল ছিনতাই, বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মালবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহণে নিয়মিতভাবে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। তারা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে শক্তির মহড়া বা দাপট দেখিয়ে জনমনে ভয়ভীতি বা ত্রাস সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী তাদের হিংস্রতা, অত্যাচার ও নির্যাতনের ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না।
উল্লেখ্য, টেনশন গ্রুপ -এর প্রধান রাইসুল ইসলাম সীমান্তের (২২) বিরুদ্ধে দ্রুক বিচার আইন ও মারামারিসহ তিনটি মামলা রয়েছে। এবং এ গ্রুপের সদস্য মো. প্রিতম রোবায়েতি ইসফাকের (২৯) নামে রয়েছে একটি হত্যা মামলা। অপর দিকে সিমান্তর ছোট ভাইয়ের গ্রুপ ডেভিল এক্সোর সদস্য মো. আশিক (১৯) এবং মো. নাঈমের (১৯) বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেনশন গ্রুপের প্রধান সীমান্তসহ পুরো গ্রুপের সদস্যদের ২০২২ সালের আগষ্ট মাসেও একবার র্যাব আটক করেছিল। সেই সময়ে বেশ কিছুদিন জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে গ্রুপটির সদস্যরা।
এছাড়া, দুটি গ্রুপের প্রধান সীমান্ত ও সারিব আপন ভাই। তারা নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শফিকুল ইসলামের ছেলে। শফিকুল গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচন করে পরাজিত হন। শফিকুল নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র সাত খুনের ঘটনায় নিহত নজরুলের শ্যালক।