মঙ্গলবার, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

জাবিতে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করল ছাত্রলীগ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩
  • ৫৪ বার পঠিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালে মঞ্চে উঠতে না দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ অতিথিকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে।

গতকাল শুক্রবার রাত ১১টায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ৩২ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা সবাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগ কর্মী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।

জানা গেছে, ৩২ ব্যাচের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে পারফর্ম করছিলেন সোলস ব্যান্ডের পার্থ বড়ুয়া। এসময় ছাত্রলীগ কর্মীরা মঞ্চে ওঠার চেষ্টা করে। এসময় আয়োজকরা অনুষ্ঠানের স্বার্থে ঢুকতে বাধা দেয়। এসময় পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে আসা লিটন নামে একজনকে মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। এসময় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন পরিস্থিতি থামাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বিশ্বিবদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ এবং সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিনকেও লাঞ্ছিত করে তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, শাখা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন রনি, উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক উৎস দত্ত, উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক অরবিন্দ ভৌমিক, সহ-সভাপতি কে.এম রহমান জাকারিয়া, উপ-আন্তার্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সবুজ রায়ের নেতৃত্বে মারধর করা হয়। এসময় তাদের সঙ্গে ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন। তখন তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মরত এক সাংবাদিকও লাঞ্ছনার শিকার হন।

প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, ‘আমি দেখতে পেলাম অনেকগুলো ছেলে মিলে লিটনকে মাটিতে ফেলে মারধর করছে। আমি পরিচয় দিয়ে তাদের থামানোর চেষ্টা করি। আমার উপর চড়াও হয়ে আমাকেও মারধর শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩২ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অতিথিকে মারধরের সময় সোহেল পারভেজ ও শাফিন ছেলেদের আটকানোর চেষ্টা করলে তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। এসময় প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিনকে বেধড়ক মারধর করেন।’

লাঞ্ছনার শিকার যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল পারভেজ বলেন, ‘মারধরের সময় ছেলেদের থামাতে গেলে আমার গায়ে ধাক্কা লাগে। পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও তাদের থামানো যাচ্ছিল না। পরে আমরা নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিয়েছি।’

এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত উৎস দত্ত বলেন, ‘আমি তখন মুক্তমঞ্চের পাশে ছিলাম। এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে আমি শোনার পর মুক্তমঞ্চে গিয়ে দেখি আমার হলের জুনিয়ররা সেখানে ঝামেলা করতেছে। তাই আমি আমার দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে হলের সিনিয়র হিসেবে সেখান থেকে জুনিয়রদের পাঠিয়ে দেই। আমি এই মারামারিতে সম্পৃক্ত নয়। কেউ যদি বলে থাকে আমি সম্পৃক্ত তবে সেটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বলেছে।’

অভিযুক্ত আকাশ তুহিন বলেন, ‘আমিতো উপস্থিত ছিলাম মুক্তমঞ্চে। কি ঘটেছে ভিতরের কাহিনী বিস্তারিত জানিনা। দেখলাম ঝামেলা হচ্ছে। এটা একটা রং ইনফরমেশন, আমি এমন কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমি দর্শকদের সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলাম।’

বিষয়টি নিয়ে জানতে বাবুল হোসেন রনি, সবুজ রায়ের মোবাইল একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা রিসিভ করেনি।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলে, ‘আমি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াতে এসেছি। এই অপ্রীতিকর ঘটনার খবর জেনেছি। ক্যাম্পাসে ফিরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা সাবেক দুই সভাপতি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এরকম কিছু ঘটে থাকলে অবশ্যই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ.স.ম ফিরোজ-উল হাসান বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম, মাত্র ক্যাম্পাসে এসেছি। মোবাইলে টুকটাক জেনেছি। বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নিবো।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com