রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তদন্ত কমিটি জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৪ মিনিট থেকে জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন গ্রিড বিপর্যয় হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা ছাড়া সারাদেশে ব্ল্যাকআউট সৃষ্টি হয়।
তদন্ত সংস্থার প্রধান ও পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক (পিএন্ড ডি) ইয়াকুব এলাহী চৌধুরী ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা আজ (বুধবার) সকালে গ্রিড বিপর্যয়ের সম্ভাব্য কারণ খুঁজে বের করার জন্য আমাদের তদন্ত শুরু করেছি।’
এর আগে দেশব্যাপী গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সংস্থাটি। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি), বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও অন্যান্য বিদ্যুৎ খাতের সংস্থার প্রতিনিধিরা।
এছাড়া একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি যিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রিড সিস্টেমের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন তাকে কমিটিতে অতিরিক্ত সদস্য হিসেবে যুক্ত করা হয়।
ইয়াকুব জানান, কমিটি গ্রিড ভেঙে পড়ার কারণ চিহ্নিত করতে সাবস্টেশন ও পাওয়ার স্টেশন এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করবে।
সরকারি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
ইয়াকুব ইউএনবিকে বলেন, ‘এটির উপসংহারে পৌঁছাতে আরো সময় লাগতে পারে, কারণ এতে গ্রিড সিস্টেমের অনেক প্রযুক্তিগত সমস্যা জড়িত।’
এদিকে, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ চিহ্নিত করতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে আরো দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে যেকোনো বিপর্যয় এড়াতে সুপারিশ করেছেন।
ওই দুটি কমিটি এখনো গঠিত হয়নি বলে জানান বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা।
পিজিসিবি ও বিপিডিবি কর্মকর্তারা মনে করেন, মঙ্গলবারের গ্রিড বিপর্যয় আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ আন্তঃসংযোগ ট্রান্সমিশন লাইনের কোথাও থেকে শুরু হয়েছিল যার ফলে সারাদেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ব্যাপকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
তিন ঘণ্টার নিরলস প্রচেষ্টার পর পিজিসিবি প্রথমে কল্যাণপুর গ্রিড সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ চালু করতে সফল হয় এবং পরে বিকাল ৫টায় রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবন ও প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করে।
ধীরে ধীরে এলাকার অন্যান্য অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা হয় এবং রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে সারাদেশে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হয়।
পিজিসিবি কর্মকর্তারা জানান, আবহাওয়া গরম না থাকায় মঙ্গলবার দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
বাংলাদেশের জাতীয় পাওয়ার গ্রিডে বিপর্যয়ের সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর। ওই সময় সারাদেশ ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল।
সূত্র : ইউএনবি