=== সাংগঠনিক ইশতেহারঃ-===
__ জাতীয় কবি পরিষদ ___
গত ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বাংলাদেশ শিশুএকাডেমি মিলনায়তনের হলরুমে বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ)-এর অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, আন্তর্জাতিক কবি সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান-২০২৪।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনের হলরুমটি সকাল আটটা থেকেই অনুষ্ঠানের ও আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য সুন্দরভাবে ফুল, বেলুন দিয়ে সাজানো হয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সকালেই একে একে আসতে থাকেন কবি, লেখক, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, ছড়াকার, আবৃত্তিকার, সমমনা বিভিন্ন সংগঠনের সংগঠক ও সাহিত্যপ্রেমী বন্ধুরা।
গণ্যমান্য অতিথিরাও উপস্থিত হোন এবং তাদেরকে ফুল ও নান্দনিক উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এছাড়াও উপস্থিত সকলের মাঝে ৩৬০টি উত্তরীয় প্রদান করার পরেও অতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে অনেকেই উত্তরীয় পাননি।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই কোরআন তেলোয়াত করেন সিনিয়র পরিচালক হোসাইন আহমেদ রিপন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, ভাষার মাসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং এছাড়াও কবিদের বহুবিধ ব্যবহারের জন্য একটি স্বতন্ত্র কবি ভবনের দাবিতে ১ মিনিট নীরবতা পালন, জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ)-এর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি জনাব টিপু রহমানের সভাপতিত্বে প্রারম্ভিক স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম. সাফায়েত হোসেন। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট ছড়াকার আসলাম সানী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক উপদেষ্টা দিলু রোকিবা, পলক রহমান, কবি জামাল উদ্দিন, মেহেদুল আলম, আজাদ রায়হান, ইভা আলমাস,পল্লব রিভূলেট, মোঃ রমজান আলী খাঁন, সুধাংশু শেখর হালদার, আরেফীন শিমুল, মোহাম্মদ মাসুদ আহমেদ, আয়েশা সীমা, আহমেদ সেলিনা, এ কে এম বজলুর রশীদ, সাইফুল ইসলাম মণ্ডল,রুহুল মারুফ,হোসেন আজিজ, সাবিনা সিদ্দিকী শিবা, শামীমা আক্তার ডেইজী, নন্দিতা দাস, সেলিনা শিউলি, সমাপ্তি খান চৌধুরী, লুৎফুন নাহার, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আবদুস সবুর, রিতা ধর, আবুল হাশেম, শোভা রাণী বিশ্বাস, ইসমত আরা,মাসুদা তোফা,জয়নাল আবেদিন খান, হাফসা আলম, মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, ফরহাদ খন্দকার, সাইকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন রাজীব, শামীম স্বপন, মেঘলা তালুকদার অরণ্য, মোঃ ফারুখ হুসাইন, হাফেজ মাশুকুর রহমান, শেখ আনোয়ার হুসাইন, কয়েছ চৌধুরী প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানটির শোভাবর্ধনে অতিথি হিশেবে উপস্থিত ছিলেন কবি বিমল গুহ, কবি ফারুক।
আহমেদ, কবি ফরিদ আহমদ দুলাল, কবি জাহাঙ্গীর ফিরোজ, ছড়াকার সোহেল মল্লিক, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহীন সামাদ, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা, আবৃত্তিকার বদরুল আহসান খান, ফারজানা করিম, ফারহানা তৃনা, আজিজুল ইসলাম, দিলারা নাহার বাবু, মুনা চৌধুরী, ইকবাল হাসান তুহিন,আরিফ মল্লিক, মুসা আকন্দ, মাহবুবুর রহমান টুনু, এছাড়াও দেশীয় এবং ভারতীয় বেশ কয়েকজন আবৃত্তি শিল্পী। মূলত অনুষ্ঠানটি ছিল আবৃত্তি শিল্পী নির্ভর। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল আবৃত্তিকারদের জয়জয়কার। তারা মঞ্চে একেকবার একেক দিক থেকে যেয়ে একেক জন আবৃত্তি করেছেন কবিদের কবিতা। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই নতুন একটি ধারা চালু হয়েছে যে, কবিদের কবিতা আবৃত্তি করবেন আবৃত্তিকারেরা। কবি’রা লিখবেন আর কবিতা আবৃত্তি করবেন আবৃত্তিকারেরা। আবৃত্তিকারীদের দরাজ কণ্ঠের আবৃত্তি উপস্থিত সবার মন কেড়ে নেয়।
বিশ্বের শতাধিক দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছিয়াত্তর হাজার সদস্যের অনলাইন সংগঠন জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) -এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যেন রুপ নেয় এক মহামিলন মেলায়। অনলাইন সংগঠন থেকে জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) যেন হয়ে উঠে পারিবারিক এক বন্ধনের সুদৃঢ় এক মহামিলন মেলা। সেরা ও দক্ষ সংগঠক জনাব টিপু রহমান-এর সংগঠন পরিচালনার সাফল্য ফুটে ওঠে অনুষ্ঠানটির প্রতিটি ক্ষেত্রে। এ যেন সফলতার এক বিশাল রহস্যময়তা!
অনুষ্ঠানটি সাজানো হয় তিনটি অধিবেশনে। প্রথম অধিবেশন শুরু হয় সকাল ১০.০০ ঘটিকায়। আলোচনা, বক্তব্য এবং কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে প্রথম অধিবেশনের সমাপ্তি হয়। দ্বিতীয় অধিবেশন শুরুর আগে নামাজ ও খাবারের বিরতি চলে। দুপুরে খাবারের আয়োজনে ৫০০ জনের খাবার এবং দিনভর ছিলো চা/কফি’র ব্যবস্থা। খাবারের বিরতি শেষে অনুষ্ঠান আবারো শুরু হয় যেন নতুন উজ্জীবনী শক্তিতে। জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এবারের মূল চমক ছিলো মূলত আবৃত্তি! এবারই নতুন চিন্তাধারায় আবৃত্তিকে উপস্থাপন করা হয় নতুন আঙ্গিকে। এতে জাতীয় কবি পরিষদ -এর বিভিন্ন কবিদের কবিতাগুলো মঞ্চে একে একে আবৃত্তি করেন প্রতিষ্ঠিত প্রতিভাবান বাচিক শিল্পীরা। ভরাট-দরাজ কণ্ঠের আবৃত্তি মূর্ছনায় একাডেমি মিলনায়তনটির পরিবেশ হয়ে ওঠে গম্ভীর ও মোহনীয়!
প্রবাস থেকে অনুষ্ঠানে সর্বক্ষণ সংযুক্ত ছিলেন জাকপ সংগঠনের অন্যতম সিনিয়র পরিচালক ও সম্মানিত উপদেষ্টা ও পরামর্শক জাতীয় কবি পরিষদ , কবি – সাংবাদিক , মানবিক ও মানবাধিকার সংগঠক লায়ন দিদার সরদার ( হংকং )
অনুষ্ঠানে গুণীজন সংবর্ধনার অংশ হিশেবে আজীবন সম্মাননা পান খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রদ্ধেয় শাহীন সামাদ ও বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা এবং কবি, কথা সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট সংগঠক রতন মাহমুদ ।
অনুষ্ঠানটির শেষাংশে নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় জাকপ সম্মাননা। জাতীয় কবি পরিষদের সুদক্ষ প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি এবং কবি টিপু রহমান-এর হাত থেকে সেসব সম্মাননা গ্রহণ করেন জাকপ-এর সম্মানিত নির্বাচিত কবি, পরিচালকবৃন্দ সেরা পাঠকরা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য ক্যাটাগরির ভিত্তিক গুণীজনেরা। সেই সাথে বহু প্রতীক্ষিত যৌথ দুটি কাব্যগ্রন্থ
“পয়মন্ত প্রথমা” ও “কাব্যকথায় চন্দ্রদ্বীপ” লেখকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সভাপ্রধান জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ)-এর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি জনাব টিপু রহমান-এর নেতৃত্বে এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে অসাধারণ একটি অনুষ্ঠান উপহার পায় উপস্থিত সকল সাহিত্যপ্রেমীরা। বন্ধু প্রতিম দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত কবি ও অতিথিদের আন্তরিক উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি প্রানবন্ত হয়ে ওঠে।
অসংখ্য কবিদের উপস্থিতিতে পুরো শিশু একাডেমি মিলনায়তন সমস্ত দিনব্যাপী এক উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছিল। দেশে এবং দেশের বাইরে থেকেও অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা দিনভর জাকপ-এর পাতায় শুভেচ্ছা বার্তা ও শুভকামনা জানায় । অনেকের আন্তরিক অনুরোধে জাতীয় কবি পরিষদ জাকপ-এর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি জনাব টিপু রহমান-এর ফেসবুক আইডি থেকে অনুষ্ঠানটি সরাসরি(লাইভ) প্রচার করা হয়। এতে অনেকেরই অনুষ্ঠানে আসতে না পারার দুঃখ কিছুটা ম্লান হয়।
অনুষ্ঠানে জাহানারা রেখার চমৎকার কণ্ঠের সঞ্চালনা পুরো হলরুমকে যেন আলাদা এক মাত্রা এনে দিয়েছিল। তাছাড়াও বাচিক শিল্পী বদরুল আহসান খান, ইকবাল হাসান তুহিন, ফারজানা করিম, আজিজুল ইসলাম,মুনা চৌধুরী, ফারহানা তৃণা , মাহিনুর মুমু, দিলারা নাহার বাবু, মুসা আকন্দ, আরিফ মল্লিক, মাহবুবুর রহমান টুনু, ফাতেমা সুলতানা সুমি, শ্রাবণী আক্তার, তানজিয়া তাজিন, নার্গিস সুলতানা, সাবিনা সিরাজসহ ভারতীয় আবৃত্তিকারদের সবার কণ্ঠ যেন পুরো অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে এবং মুগ্ধ করে রেখেছিল তাদের চৌকস কণ্ঠের আবৃত্তি দিয়ে। এছাড়াও অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলো জাতীয় কবি পরিষদ -এর অদম্য উদ্যোমী- পরিশ্রমী প্রিয় কিছু মুখ।
সন্ধ্যার আঁধার ঠেলে একে একে সমস্ত আয়োজন শেষে অনুষ্ঠানের সভা প্রদানের সমাপনী বক্তব্য ও সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন শেষে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আবার আগামীতে প্রাণের এই মিলন মেলায় মিলবে -এই আশ্বাসে শিশু একাডেমি মিলনায়তনের প্রাঙ্গণ থেকে বিদায় নেয় কবি-সাহিত্যিকরা।
জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) সত্যিই এক অনন্য মাত্রার অনলাইন সংগঠন যেখানে শুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন সাহিত্য চর্চা করা যায়। কবি’রা তাদের জীবন, তাদের আনন্দ-বেদনাকে তুলে ধরেন কবিতার শব্দে শব্দে। জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) শুদ্ধ সাহিত্যের মশাল নিয়ে এগিয়ে চলুক আগামীর পথে। সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ) একটি উজ্জ্বল আলোকশিখা হয়ে উঠুক, যে আলোকশিখা থেকে লক্ষ-কোটি কবি জন্ম নিবে আগামীতে।
দীর্ঘজীবী হোক জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ)!
জয়তু জাকপ! কবি ও কবিতার জয় হোক এবং বিশুদ্ধ সাহিত্য চর্চার অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে চলুক জাতীয় কবি পরিষদ (জাকপ )
ধন্যবাদ সহ শুভ কামনায়ঃ~
টিপু রহমান
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
জাতীয় কবি পরিষদ
ঢাকা – বাংলাদেশ