অন্য ভাষায় :
সোমবার, ০৭:২২ অপরাহ্ন, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

জমে উঠেছে পশুর হাট

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৬ জুন, ২০২৪
  • ৬ বার পঠিত

ঈদের দুই দিন আগেই জমে উঠল রাজধানীর সব পশুর হাট। গতকাল সকাল থেকেই প্রতিটি হাটে ক্রেতাদের ঢল নামে। বিক্রেতারা ক্রেতার আগমনে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এভাবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত ক্রেতার উপস্থিতি বাড়তে থাকবে। তবে দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বেশি দামে অসন্তোষ প্রকাশ করে ক্রেতারা বলছেন, এমন দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।

রাজধানীর বিভিন্ন হাটের ইজারাদার-বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যাপ্ত কোরবানির পশু বাজারে এলেও দাম চড়া। লাখ টাকার নিচে তেমন ভালো গরু নেই বাজারে। সেসব গরু যে খুব বড় তাও নয়। কোরবানির পশু এসেছে বগুড়া, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মানিকগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে।

খামারি ও বিক্রেতারা বলছেন, সারা বছর গরুর পেছনে খামারিদের যে খরচ, কষ্ট, যতœ এসব সম্পর্কে ক্রেতাদের তেমন ধারণা নেই। তাই, না বুঝে তারা গরুর দাম বলছেন। এখনো ক্রেতারা আসলে বাজার যাচাই করছেন। অন্যদিকে, ক্রেতারা বলছেন, অনেক বেশি দাম চাচ্ছেন খামারি ও ব্যাপারীরা।

বিক্রেতারা জানান, এক সপ্তাহ আগে থেকেই কোরবানির পশু বাজারে এসেছে। তবে বেচা বিক্রি পুরোদমে শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে। এখন বাজারে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বড় গরুও বিক্রি চলছে। তবে ছোট গরুর তুলনায় সেটি কম।
গরুর দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিক্রেতারা বলছেন, এবার গোখাদ্যের দাম বেশি ছিল। গরু লালন-পালনের খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় দাম পাওয়া যাচ্ছে না। বড় গরুর দাম আরো কম দিতে চাচ্ছেন ক্রেতারা।

তবে বিক্রেতার দাবির সাথে একমত নন ক্রেতারা। এ বিষয়ে একাধিক ক্রেতা বলেন, এবার ছোট গরুর দাম খুব বেশি চাচ্ছে বিক্রেতারা। অন্যবারের তুলায় সেটা অনেক বেশি, অথচ বড় গরুর দাম কম। ছোট-মাঝারির চাহিদা বাড়ায় তারা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি হাটেই বিভিন্ন আকারের ও রঙের গরু এসেছে। তবে মাঝারি আকারের গরুর সংখ্যাটা বেশি। গত কয়েক দিন লাখ টাকার কম দাম না হাঁকলেও এখন ব্যাপারীদের সর্বনিম্ন ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাতে দেখা গেছে। অপরদিকে খাসির দাম আকারভেদে সর্বনিম্ন ১০-১৫ হাজার, আর সর্বোচ্চ জাত ও আকারভেদে ৩০-৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকা হচ্ছে।
পশুর হাটে বড় গরুর বাইরে দাম চড়া হলো উট ও দুম্বার। হাটে এবার তোলা হয়েছে ভারতীয় উট। যেগুলোর দাম হাঁকা হচ্ছে ২০ লাখ। আর মরুর দুম্বার দাম চাওয়া হচ্ছে তিন লাখেরও বেশি। অন্যদিকে গরুর পরই ছাগল ও খাসির চাহিদা বেশি। দামও একেবারে কম নয়। ছাগল ২০ থেকে ২৫ হাজার হলেও খাসির দাম ৪০ থেকে লাখ টাকার বেশি হলেও গতকাল দাম ছিল আগের চেয়ে কম।

রাজধানীর হাটগুলোতে এরই মধ্যে কোরবানির পশু তুলেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যাপারীরা। প্রতিদিনই গরু-ছাগল নিয়ে হাটে আসছেন ব্যাপারীরা। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, গত রাত হাটে ক্রেতা এসেছেন, গরুও দেখেছেন। তাদের পছন্দের কথা বলেছেন। তবে বাসাবাড়িতে জায়গা স্বল্পতার কারণে আগেই কিনতে চাচ্ছেন না তারা। তবে আজ থেকে বিক্রি বাড়বে বলে জানান তারা।
সিটি করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী, এ বছর রাজধানীতে কোরবানির পশুর মোট ২০টি হাট বসেছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৯টি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ১১টি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সারুলিয়া স্থায়ী পশুর হাটসহ ১০টি অস্থায়ী হাট হলো- শ্যামপুর কদমতলী ট্রাক স্ট্যান্ডের পাশে, রহমতগঞ্জ ক্লাবের পাশে, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘ ক্লাবের পাশে, হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি কলেজ এলাকা, মেরাদিয়া বাজারের পাশে, আমুলিয়া মডেল টাউনের পাশে, দনিয়া কলেজের কাছের খালি জায়গা ও ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনালের আশপাশে এবং কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোড ও লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবের আশপাশে।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাটগুলো হলো- উত্তরা দিয়াবাড়ী বউবাজার এলাকা, মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিং, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের খালি জায়গা, কাওলার শিয়ালডাঙ্গার এলাকা, ভাটারার সুতিভোলা খালের পাশের জায়গা, মোহাম্মদপুর বছিলা ৪০ ফুট রাস্তার পাশে, খিলক্ষেতের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিমপাড়ার খালি জায়গা এবং ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাচকুড়া ব্যাপারীপাড়ার রহমান নগর আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা।

কর্তৃপক্ষ জানান, কোরবানির পশু বেচাকেনা ও হাটগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্যসহ বিশেষ নিরাপত্তারব্যবস্থা থাকছে। এ ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ছয় আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা পশুর হাটগুলোতে শৃঙ্খলা রক্ষা এবং যেখানে সেখানে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের অস্থায়ী বিক্রয় কার্যক্রম বন্ধে কাজ করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com