শনিবার, ০১:২৬ অপরাহ্ন, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ছাড় দিতে নারাজ রওশন-কাদের

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৮৪ বার পঠিত

ক্রমেই বাড়ছে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ ও দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরের বিরোধ। সম্মেলনের দিকে আগাচ্ছেন বেগম রওশন এরশাদ। সে লক্ষ্যে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সম্মেলন প্রস্তুতির কমিটিও করছেন তিনি। অন্যদিকে জিএম কাদের এ কর্মকাণ্ডকে দলীয় গঠনতন্ত্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে দল পরিচালনা করছেন।

শীর্ষ দুই নেতার এ বিরোধে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে কৌশলী ভূমিকা নিয়েছেন জাপার এমপিরা। দুই-একজন চেয়ারম্যানের বিপক্ষে কথা বললেও বেশিরভাগই মধ্যপন্থা নিয়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে অবস্থান স্পষ্ট করতে চান তারা।

গত এক সপ্তাহে নড়াইল, খুলনা মহানগর ও নোয়াখালী জেলার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করেছেন রওশনপন্থিরা। এ ছাড়া জিএম কাদেরকে না জানিয়েই রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একেএম আবদুর রউফ মানিককে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সময় যাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে; কিংবা অভিমানে দল ত্যাগ করেছে, তাদের দলে ফিরিয়ে আনার আদেশ দিয়েছেন রওশন এরশাদ।
অন্যদিকে জিএম কাদেরও বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

দুই নেতা দুই ধারায় দল পরিচালনা করার বিষয়ে দলটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক আমাদের সময়কে জানান, জাপায় এরকম বিরোধ নতুন না। নির্বাচনের আগে নানা প্রক্রিয়ায় এরকম হয়ে থাকে। কিন্তু নির্বাচন গেলে আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু এভাবে তো দলটি সামনে যেতে পারছে না। গত এক যুগ ধরে দলটি ক্রমানুযায়ী পিছিয়েছে।

সম্পাদক পর্যায়ের আরেক নেতা বলেন, অতীতের মতোই দলীয় স্বার্থে নয়; ব্যক্তিস্বার্থে দ্বন্দ্ব হচ্ছে। দায়িত্ব যেই নিক তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনুভূতির দিকে একবারও তাকান না। নিজেরা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তিনি বলেন, নিজেরা দলের প্রতি দায়বদ্ধ থাকলে আড়ালে থেকে অদৃশ্য সুতো দল নাড়াতে পারত না।

জানা গেছে, জিএম কাদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বেশ ভালোই চলছিল। দলে বিরোধের জন্ম গত ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হঠাৎ গণমাধ্যমে প্রকাশিত রওশন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি। এ চিঠিতে তিনি আগামী ২৬ নভেম্বর সম্মেলনের আহ্বান করেন। এছাড়া নিজেকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক করে আট সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেন তিনি। এ কমিটিতে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেও রাখা হয়নি। ওই সময় চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বলা হয়, কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার প্রধান পৃষ্ঠপোষকের নেই।

এর পরের সপ্তাহে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে ও রংপুর-৩ আসনের এমপি রাহগির আল মাহি সাদকে এরশাদ ট্রাস্টের সদস্য করা হয়। পরে জিএম কাদেরের নেতৃত্বের সমালোচনা করায় দলের সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এবং একজন উপদেষ্টাকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এভাবে দুই ধারায় বিভক্ত ও দল থেকে অব্যাহতি দলটিকে আরেক ভাঙনের দিকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে কিনা এমন সংশয় দলের নেতৃবৃন্দের। দলটির ইতিহাস থেকে জানা যায়, এর আগেও পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (জাপা) ভেঙে ছয়টি দলে ভাগ হয়ে আছে। ছয়টি দল হলো- বর্তমানে জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা), আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নেতৃত্বাধীন জেপি, আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বিজেপি, ডা. মতিনের নেতৃত্বাধীন বিজেপি, মোস্তফা জামান হায়দারের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি ও সর্বশেষ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (পুনর্গঠন)। এর মধ্যে রওশনপন্থিদের সঙ্গে কাজ করছেন প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। নতুন দল জাতীয় পার্টি-পুনর্গঠন নিয়ে বিদিশা সিদ্দিকের তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়।

জাতীয় পার্টির বর্তমান সংকট প্রসঙ্গে জিএম কাদের বলেন, তাদের দল এখন যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত। গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে যাবে দলটি। কোনো ষড়যন্ত্রে মাথানত করবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com