মঙ্গলবার, ১০:২৩ অপরাহ্ন, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ছানি অপারেশন যে কারণে করে নেওয়া ভালো

ডা. মো. ছায়েদুল হক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৮২ বার পঠিত

ছানিজনিত অন্ধত্ব একটি অভিশাপ। বর্তমানে পৃথিবীতে ৩৯ মিলিয়ন মানুষ অন্ধত্বের শিকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে, ৫১ শতাংশ অন্ধত্বই ছানিজনিত। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ ছানিরোগী এ অন্ধত্বে ভুগছেন। ছানি হলো চোখের সামনের খোলা অংশ, যা দিয়ে আলোকরশ্মি চোখের ভেতরে প্রবেশ করে। প্রবেশমুখেই একটি স্বচ্ছ প্রাকৃতিক লেন্স বসানো থাকে, যার কাজ আলোকরশ্মিকে নিয়ন্ত্রণ করে দেখতে সাহায্য করা। কোনো কারণে এ লেন্সটি যদি স্বচ্ছতা হারিয়ে ফেলে, তবে আলোকরশ্মি চোখের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। তখন দৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হয়। চোখের লেন্সের এ অস্বচ্ছ অবস্থাকেই বলা হয় ছানি।

চিকিৎসা : ছানির চিকিৎসা হলো অপারেশনের মাধ্যমে চোখের অস্বচ্ছ লেন্স অপসারণ করে সেখানে একটি কৃত্রিম লেন্স প্রতিস্থাপন করে দেওয়া। অস্বচ্ছ লেন্স অপসারণে দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এক পদ্ধতিতে ৬-৭ মিলিমিটার কাটতে হয়। অন্য পদ্ধতিতে ৩ মিলিমিটার কেটে অস্বচ্ছ লেন্সটি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ভেঙে ছোট ছোট কণায় পরিণত করে বের করে আনা হয়। এ পদ্ধতিটি ফেকো অপারেশন হিসেবে পরিচিত। এ দুটি পদ্ধতির কোনোটিতেই সেলাইয়ের প্রয়োজন হয় না।

অপারেশনে সতর্কতা : ভালোভাবে অপারেশন সম্পন্ন হলে দীর্ঘমেয়াদে দুটি পদ্ধতির প্রায় সমান ফলাফল লাভের সম্ভাবনা থাকে। তবে অপারেশন-পরবর্তী দিনগুলোয় ফেকোর ফলাফল তুলনামূলক ভালো। এ ক্ষেত্রে খরচও বেশি হয়। কৃত্রিম লেন্স সম্পূর্ণ নিরাপদ বস্থ দিয়ে বানানোর ফলে এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। একবার চোখে প্রতিস্থাপনের পর আজীবন নিরাপদে থাকে। সাধারণত ডায়াবেটিস, হার্ট, কিডনি বা অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত বয়স্ক রোগীর বেলায় এ প্রশ্নটি প্রায়ই ওঠে। ছানি অপারেশনে সাধারণত অজ্ঞান করার প্রয়োজন পড়ে না। তাই ঝুঁকি অনেক কম। তবু হার্টের রোগী বা অন্যান্য জটিল রোগীর ক্ষেত্রে শারীরিক অবস্থা ভালো করে পরীা-নিরীার মাধ্যমে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো। ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে অবশ্যই ডায়াবেটিস পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

অপারেশন না করলে : অনেক অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অনেকেই মনে করেন, কোনোমতে জীবন পাড়ি দিয়ে দেবেন। অপারেশন করাবেন না। কিন্তু দীর্ঘদিন ছানি চোখে থাকা কোনোমতেই নিরাপদ নয়। এতে চোখের প্রেসার বেড়ে ফেকোলাইটিক গ্লুকোমা দেখা দিতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা না পেলে স্থায়ী অন্ধত্ব দেখা দেয়। তাই ছানি হলে সময়মতো অপারেশন করানো ভালো।

খরচ : অপারেশনে কিছু খরচের ব্যাপার এসেই যায়। যার সামর্থ্য নেই, তিনি কি অন্ধ থাকবেন? দায়িত্ব নিতে হবে সমাজ, সরকার, সংস্থা বা ব্যক্তিকেই। সর্বোপরি চক্ষু চিকিৎসকরা একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারেন এ ক্ষেত্রে। প্রতিরোধযোগ্য এ অন্ধত্ব নিবারণে প্রত্যেককেই যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। তবেই দৃষ্টি সবার জন্য উন্মুক্ত হবে।

লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন

এবং প্রাক্তন সহযোগী অধ্যাপক

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল

চেম্বার : আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার

৩৮/৩-৪, রিং রোড, শ্যামলী, আদাবর, ঢাকা

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com