সোমবার, ১০:১১ পূর্বাহ্ন, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

চুল প্রতিস্থাপনে আধুনিক চিকিৎসা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৯০ বার পঠিত

পিআরপি বলতে বোঝায় Platelet Rich Plasma. এটি রক্তের বিশেষ প্রক্রিয়াজাত অংশবিশেষ, যেখানে রক্তরস অণুচক্রিকা এবং প্রয়োজনীয় গ্রোথ ফ্যাক্টর সমৃদ্ধ থাকে। এতে যেসব উপাদান থাকে, তা নতুন কোষ তৈরির পাশাপাশি পুরনো কোষগুলো উজ্জীবিত করে এবং এর ভিত্তিতে মানব দেহের বিভিন্ন অংশের, যেমন ত্বক, চুল, অস্থিসন্ধি, মাংসপেশির আঘাত, টেন্ডনে আঘাত, পুরনো ক্ষত চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। উপকৃত হচ্ছে গোটা মানবসমাজ।

ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে পিআরপি থেরাপি ভালো কাজ করে। যেমন ব্রনের ক্ষত, লোমকূপ বড় হয়ে যাওয়া, চোখের নিচের কালো দাগ, অল্পবয়সে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়া, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানো ইত্যাদি। চুলের চিকিৎসায় এ থেরাপি নিয়ে এসেছে অভাবনীয় সাফল্য। সাধারণ চুল পড়া, স্থানে স্থানে চুল পড়া সর্বোপরি বংশগত চুল পড়া রোধে এ থেরাপি এনেছে যুগান্তকারী সাফল্য।

যেভাবে দেওয়া হয় : রোগীকে পিআরপি দেওয়ার আগে নির্দিষ্ট স্থান বিশেষ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হয়। এরপর স্থানীয়ভাবে অবশকারী ক্রিম বা ইঞ্জেকশন দিয়ে সাময়িকভাবে অবশ করা হয়, যা ৩০- ৪০ মিনিট কার্যকরী থাকে। এ সময়ের মধ্যেই থেরাপি ইনসুলিন সিরিঞ্জের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। থেরাপি নেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে রোগী বাসায় যেতে পারেন। স্বাভাবিক সব ধরনের কাজকর্মও করতে পারেন। নারী-পুরুষ উভয়ই চুল ও ত্বকের আধুনিক চিকিৎসায় এতে ভালো ফলাফল পেয়ে থাকে। তবে খেয়াল রাখতে হবে এ প্রক্রিয়া অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে করা উচিত। সাধারণত প্রতিমাসে ১ বার করে ৮ থেকে ১২ মাস এটি করা হয়। থেরাপি শুরুর ৩ মাস পর থেকে রোগী অবস্থার পরিবর্তন ও উন্নতি বুঝতে পারেন। রোগের অবস্থান, রোগীর বয়স, শারীরিক অবস্থা সবকিছুর ওপর ভিত্তি করে ফলাফল নির্ভর করে। ভালো ফলাফলের জন্য অনেক সময় থেরাপির পাশাপাশি ওষুধ সেবন ও ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে।

পিআরপি থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : ইঞ্জেকশনের স্থানে ব্যথা করা, মাথার ত্বকে ইনফেকশন, নার্ভ ড্যামেজ, চুলকানি ইত্যাদি হতে পারে। তবে এসব সাময়িক। কোনো অবস্থায় ব্রেইনের কোনো সমস্যা বা ভবিষ্যতে ক্যানসার হওয়ার মতো বড় কোনো অসুখ হওয়ার সুযোগ নেই। পিআরপি থেরাপি নেওয়ার পর ঠাণ্ডা বা অতিরিক্ত গরম সেঁক নেওয়া যাবে না। অ্যালকোহল পান থেকে বিরত থাকুন।

পিআরপি থেরাপি যারা নিতে পারবেন না : যাদের প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকার সংখ্যা একেবারে কম, যাদের রক্তে ফিব্রিনোজেন কম, শরীরে দীর্ঘমেয়াদি কোনো ইনফেকশনের উপস্থিতি আছে যাদের, রক্তরোগ, ক্যানসারের রোগী, দীর্ঘমেয়াদি লিভারের রোগ আছে যাদের, যারা এন্টি কোয়াগুলেসন থেরাথি নিয়মিত নিয়ে থাকেন, তাদের পিআরপি থেরাপি নেওয়া উচিত নয়।

থেরাপি যেভাবে কাজ করে : ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে থেরাপি প্রয়োজনীয় স্থানে দেওয়ার পর পিআরপির ভেতরের গ্রেনুউল ভেঙে প্রচুর গ্রোথ ফ্যাক্টর রিলিজ করে, যা স্বাভাবিক গ্রোথ ফ্যাক্টরের পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে টিস্যুর নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। তবে সাধু সাবধান। অদক্ষ, অযোগ্য হাতে এ থেরাপি হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

লেখক : চুল বিশেষজ্ঞ ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন; সহকারী অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা

চেম্বার : ডা. জাহেদ’স হেয়ার এন্ড স্কিনিক

সাবামুন টাওয়ার বিল্ডিং (ষষ্ঠতলা), পান্থপথ মোড়, ঢাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com