বর্তমান সময়ে অনেকেই স্বাস্থ্য নিয়ে বেশ সচেতন। প্রতিদিনের খাবার ও খাবারের পুষ্টিগুণ নিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ছে। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের খাবারের তালিকায় এখন বেশ জনপ্রিয় ‘চিয়া সিড’।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, সকালের নাশতায়, দুপুরে খাবার শেষে দইয়ের সঙ্গে কিংবা রাতে শেষপাতে মিষ্টিমুখ করতে পুডিংয়ের মধ্যে চিয়া সিড। সবকিছুতেই ইদানীং চিয়া সিডের ব্যবহার করার চল হয়েছে।
চিয়ার যে নানা রকম পুষ্টিগুণ রয়েছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যেহেতু চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, তাই পানিতে ভেজানো চিয়া খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভর্তি থাকে এবং বারবার খাওয়ার প্রবণতা কমে। তবে সরাসরি মেদ ঝরানোর সঙ্গে চিয়া সিডের আদৌ কোনো যোগ আছে কি না, তার প্রমাণ না পাওয়া গেলেও এই বীজ অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হজমের সমস্যা হয়, সে বিষয়ে নিশ্চিত চিকিৎসকরা।
অতিরিক্ত পরিমাণে চিয়া সিড খেলে হজমের সমস্যা হয় কেন?
অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গেলে ফাইবারজাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু উপকার হবে ভেবে যদি অতিরিক্ত ফাইবার খেয়ে ফেলেন, সে ক্ষেত্রে পেটব্যথা, গ্যাস, হজমের সমস্যা, ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, চিয়া বীজ বেশি খেলে শরীরে জলের ঘাটতি পর্যন্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। তাই চিয়া বীজ খাওয়ার পাশাপাশি জল খাওয়ার পরিমাণ যেন ঠিক থাকে, সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।
চিয়া হচ্ছে সালভিয়া হিসপানিকা নামক মিন্ট প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ। এটি মূলত মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে বেশি জন্মায়। প্রাচীন অ্যাজটেক জাতির খাদ্যতালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত বলে বিশেষজ্ঞরা দাবি করে থাকেন। এগুলো দেখতে অনেকটা তোকমা দানার মতো। চিয়া বীজ সাদা ও কালো রঙের এবং তিলের মতো ছোট আকারের।
চিয়া সিড খাওয়ার উপকারিতা
এতে আছে ওমেগা-৩, যা হৃদ্রোগের ঝুঁকি ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে
শরীরের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বাড়ায়
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় চিয়া সিড রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আরও শক্তিশালী করে
মেটাবলিক সিস্টেমকে উন্নত করার মাধ্যমে এটি ওজন কমাতে সহায়তা করে
ব্লাড সুগার (রক্তের চিনি) স্বাভাবিক রাখে, যা ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়
এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ উপকারী
কোলন পরিষ্কার রাখে। ফলে কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে
এটি শরীর থেকে টক্সিন (বিষাক্ত পদার্থ) বের করে দিতে সাহায্য করে
পেটের প্রদাহজনিত বা গ্যাসের সমস্যা দূর করে
ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে
ক্যানসার রোধ করে
হজমে সহায়তা করে
হাঁটু ও জয়েন্টের ব্যথা দূর করে
অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার-অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার দূর করে
ত্বক, চুল ও নখ সুন্দর রাখে