চট্টগ্রামে পহেলা ফাগুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (অমর একুশে) উপলক্ষ্যে এবার ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হওয়ার প্রত্যাশা করছেন চট্টগ্রাম ফুল ব্যবসায়ী ‘দোকান মালিক ঐক্য পরিষদ’।
শুক্রবার ওই সংগঠনের সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: নাছের গনি চৌধুরী এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে দেশী উৎপাদিত ফুলের কদর বাড়ছে। এ কারণে তিনি দেশে উৎপাদিত ফুলের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়ে যত্ন নিচ্ছেন।
তিনি জানান, গত বছর এ দিনে একটি দেশী গোলাপ ৪০ টাকা, দেশী চায়না গোলাপ ৭০ টাকা ও পিংকালারের একটি গোলাপ ১২০ টাকার উপরে খুচরা বিক্রি হয়েছিল। ফুলের এ চাহিদা অব্যাহত থাকলে আসছে ২১ ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পর্যন্ত ফুল বিক্রি ৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, ভালোবাসা দিবস, পহেলা ফাগুন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েক দিন ধরেই দেশী কাঁচা ফুলের কদর বাড়ছে। দু’টি দিবস একই দিনে হওয়ার পাশাপাশি মাতৃভাষা দিবস নিয়ে কয়েক দিন চট্টগ্রামসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের ফুল চাষিরা তাদের বাগানে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা দুই-এক দিনের মধ্যে বাগান থেকে নানা জাতের ফুল সংগ্রহ করবেন।
সাতকানিয়া খাগরিয়ার বাসিন্দা ফুল চাষি ও বিক্রেতা আবদুল গফুর জানালেন, এবার দেশী ফুলের কদর বেড়েছে সে কারণে দামও বেড়েছে। পাইকারিভাবে প্রতিটি ১২ টাকা, গাঁদা ১০০০টি ২৫০ টাকা, জিপসি প্রতি আঁটি ১৫-২০ টাকা ও চন্দ্রমল্লিকা প্রতিটি তিন-চার টাকা বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে চায়না গাঁদা প্রতি ১০০টি চার থেকে ৫০০ টাকা এবং চায়না বেলি বিক্রি হচ্ছে প্রতি ১০০টি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
তিনি জানান, এবার শুধুমাত্র সাতকানিয়া থেকেই পহেলা ফাগুন থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার ফুল বিক্রির প্রত্যাশা করছেন ফুল ব্যবসায়ী ও চাষী আব্দুল গফুর।
নয়া দিগন্তকে চট্টগ্রাম-ফুল ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: নাছের গনি চৌধুরী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে গুটিকয়েক অসাধু ফুল ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে নানা জাতের প্লাস্টিকের ফুল আমদানি করায় দেশী ও তাজা ফুলের বাজারে ধ্স নেমেছিল। এ কারণে চট্টগ্রাম, ঢাকা, যশোর, সিলেটসহ সমগ্রদেশে ফুল চাষ ও বিক্রির সাথে ৮০ হাজার ফুল চাষি ও ফুল বিক্রেতার জীবন-জীবীকা অনেকটা হুমকির মুখে ছিল। বর্তমানে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে বাণিজ্যিকভাবে দেশী ফুল চাষের সুদিন ফিরছে।
তিনি আরো জানান, সরকার ফুলের জন্য সুখ্যাত যশোরে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বিশাল কোল্ডস্টোরেজ স্থাপনসহ চাষিদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছেন। এ কারণে দেশে ফুল চাষে সুদিন ফিরছে।
ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, বিদেশ থেকে ফুল আমদানির ক্ষেত্রে সরকার যদি আমদানি শুল্কহার বৃদ্ধি করে দেন। তাহলে আমদানিকারকগণ বিদেশ থেকে ফুল আমদানিতে নিরুৎসাহিত হবেন। ফলে দেশী ফুলের চাহিদা ও কদর দু’টিই আরো বৃদ্ধি পাবে।