প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রোববার পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বেড়েছে চার থেকে পাঁচ ফুট। এর ফলে কোথাও বাঁধ ভেঙে, কোথাও বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে।
প্লাবিত হয়েছে নিচু এলাকাগুলোও। নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধ।
জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নদ-নদীতে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। এই সময় ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, চিনাবুনিয়া ও গরুভাঙা গ্রাম প্লাবিত হয়। অন্যদিকে চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআণ্ডা গ্রামেও অনেক আগ থেকেই ভেঙে থাকা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়।
এছাড়া চরমোন্তাজ ইউনিয়নের বউবাজার, দক্ষিণ চরমোন্তাজ, হিন্দু গ্রাম, মিটার বাজার ও নয়ারচর এলাকার কোথাও বাঁধ ভেঙে এবং কোথাও বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে ওইসব গ্রামে। শুধু তাই নয়, উপজেলার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা এবং বেড়িবাঁধের বাহিরের এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাহিরের উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া, চরমোন্তাজ ইউনিয়নের মোল্লা গ্রাম, বেড়িবাঁধহীন সদর ইউনিয়নের চরকাশেম, চরযমুনা, চরকানকুনি, ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের চরনজির, চরকাউখালী প্লাবিত হয়। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়ে এসব এলাকার হাজারও মানুষ। তবে দুপুর ২টার পর নদ-নদীতে ভাটা শুরু হওয়ায় পানি কমতে থাকে সেসব এলাকা থেকে।
কিন্তু রাতের জোয়ারে আবারো গ্রামগুলো প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা করছে স্থানীয়রা। তাদের ভাষ্যমতে, নতুন করে কয়েকটি এলাকার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমোন্তাজ, চরআন্ডা এবং চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্ট। মৎস্য বিভাগের প্রাথমিক তথ্যমতে, উপজেলার প্রায় এক হাজার পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে মৎস্য চাষীদের ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, চরমোন্তাজের চরআন্ডা এবং দক্ষিণ চরমোন্তাজ এলাকায় নতুন করে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকেছে। চালিতাবুনিয়ায় ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকেছে। নতুন করেও সে এলাকায় বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় পুকুর ও ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আশ্রয় কেন্দ্রে পাঁচ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। রাতে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তিনি।