শেখ হাসিনার অবৈধ ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর আত্ম গোপনে যাওয়া বরিশালের গৌরনদীর আওয়ামী সন্ত্রাসী ও গৌরনদী পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মো. বাবুল খান ওরফে বাবলু খান (৪২)কে পুলিশ শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে।
এ খবর জানাজানি হলে এলাকার সাধারন জনগন আনন্দ উল্লাস প্রকাশ করতে রাজপথে নেমে আসে। গৌরনদী উপজেলা ও পৌর এলাকার সাধারন জনগনের ব্যানারে ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে এলাকাবাসী একটি আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কসহ উপজেলা সদরের গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ড এলাকা প্রদক্ষিন করে।
স্থানীয় বাসিন্ধা, বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মী ও গৌরনদী মডেল থানা সূত্রে জানাগেছে, গ্রেফতার হওয়া মো. বাবুল খান ওরফে বাবলু খান (৪২) উপজেলার উত্তর বিজয়পুর গ্রামের মৃত জয়নাল খানের ছেলে। সে গৌরনদীর দানব খ্যাত সাবেক পৌর মেয়র ও সন্ত্রাসের গড ফাদার মো. হারিছুর রহমানের সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর অন্যতম সদস্য ও এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী। সে এলাকায় খুন, যখম, চাঁদাবাজী, দখলবাজী মাদক সেবন ও বেচা-কেনাসহ নানা অপরাধ কর্মের সাথে সরাসরি জড়িত। শেখ হাসিনার অবৈধ শাসন আমলে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের আভ্যন্তরিন কোন্দলের জেরে গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডে খুন হওয়া ছাত্রলীগ কর্মী রুমান ফকির হত্যাকান্ডেও সে সরাসরি জড়িত। তখন সে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সন্ত্রাসী সান্টু ভ‚ইয়ার অন্যমত সহযোগী ছিল। গত এক যুগেরও বেশী সময় ধরে নানা অপরাধ কর্মকান্ড করে সে এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীর পরিচিতি অর্জন করেছে। একই সাথে গৌরনদীর দানব খ্যাত মেয়র হারিছের অন্যমত সহযোগী গৌরনদী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান শামীমের বডিগার্ড হিসেবে এলাকায় তার বেশ পরিচিতি আছে। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুরসহ তাদের ওপর হামলা ও শারিরীক নির্যাতনেও নেতৃত্ব দিত সন্ত্রাসী বাবলু খান। সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রয়ারী দৈনিক সমকাল এর গৌরনদী প্রতিনিধি খোন্দকার মনিরুজ্জামান মনিরের ওপর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সান্টু ভ‚ইয়ার নেতৃত্বে হামলাকারী ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের দলেও ছিল ওই শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবলু খান। হামলাকালে তারা সাংবাদিক মনিরের দুই পা পিটিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা চালায়।
শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবলু খানকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে থানার এসআই মো. মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ শুক্রবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার মোল্লাবাড়ি বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। এরপর তাকে নিয়ে পুলিশ তার অস্ত্রধারী সহযোগীদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টায় অভিযান চালায়। রাত সোয়া ১২টার দিকে তাকে থানায় এনে গ্রেফতার দেখানো হয়। তার বিরুদ্ধে ১টি চাঁদাবাজী মামলা, ১টি ভ‚মি দখলের মামলা ও এক বিএনপি কর্মীর ওপর হামলা ও মারধরের ১টি মামলাসহ মোট ৩টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ভুমি দখলের মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা রয়েছে। শনিবার দুপুরে তাকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরন করে।