মাদক সম্রাট খ্যাত দেশের দক্ষিনাঞ্চলের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হীরা মাঝির নেতৃত্বে তার স্বজন ও সহযোগীরা মিলে শনিবার বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাকার আরিফ ফিলিং ষ্টেশন নামের একটি তেলের পাম্প জবরদখল করে নিয়েছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দখলকারীরা ওই ফিলিং ষ্টেশনের স্টাফ, কর্মচারীদেও দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শনিবারের সারাদিনের তেল বিক্রি থেকে পাওয়া ২লক্ষ ৯০ হাজার টাকা জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। পাম্প মালিকের মেয়ে পপি বাদী হয়ে এ ঘটনায় ওইদিন রাতে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ মামলায় অভিযুক্ত ২ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার বাদী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দেয়া বর্ননায় জানাগেছে, উপজেলার তারাকুপি গ্রামের হারুন অর রশিদ বেপারী বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন উপজেলার কটকস্থল বাসষ্ট্যান্ডের পার্শ্ববর্তি তারাকুপি মৌজায় আরিফ ফিলিং ষ্টেশন নামের একটি তেলের পাম্প স্থাপন করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন। ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় অর্থের সংকট দেখা দিলে মালিক হারুন অর রশিদ বেপারী কটকস্থল গ্রামের মানিক মাঝির কাছ থেকে মাসিক ২৮ হাজার টাকা সুদ দেয়ার চুক্তিতে ৩০লক্ষ টাকা গ্রহন করেন। এর পর থেকে মানিক মাঝি ও তার সহোদর মাদক সম্রাট খ্যাত দেশের দক্ষিনাঞ্চলের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হীরা মাঝিসহ স্বজনদের নিয়ে পাম্পটি দখল করার জন্য নানারকম চক্রান্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকাল ১০টার দিকে হিরা মাঝির নেতৃত্বে তার পিতা মোঃ মজিবর মাঝি ওরফে ইঙ্গুল মাঝি, ভাই মানিক মাঝি, সাদ্দাম মাঝি, মনির মাঝি, ভাতিজা সিফাত মাঝি, তুহিন মাঝি, স্বজন সুজন মীরসহ আরো ৪০/৫০জন অজ্ঞাতনামা সহযোগী মিলে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই ফিলিং ষ্টেশনের ভেতরে ঢুকে স্টাফদের গালি-গালাজ করে, ভয় ভীতি দেখায় ও ফিলিং ষ্টেশনটি জবরদখল করে রাখে। ওই দিন রাত ৮টার দিকে তারা ফিলিং ষ্টেশনটির কাউন্টারে ঢুকে ষ্টাফদেরকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শনিবার সারাদিনের তেল বিক্রি থেকে পাওয়া নগদ ২লক্ষ ৯০ হাজার টাকা জোর পুর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একই সময় তারা স্টাফদেরকে হুমকি দিয়ে যায় যে, রাতের বিক্রিত তেলের টাকা হিসাব করে রাখবি সকালে এসে নিয়ে যাব। ঘটনার পর ফিলিং ষ্টেশনটির মালিক হারুন অর রশিদ বেপারীর মেয়ে পপি বাদী হয়ে হিরা মাঝি(৪৫), তার ভাই মানিক মাঝি (৫২), সাদ্দাম মাঝি (৩৫), মনির মাঝি (৪০, ভাতিজা সিফাত মাঝি (২৫), তুহিন মাঝি(২৮), তাদের আত্মীয় সুজন মীর (৪২)সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪০/৫০জন সহযোগীর বিরুদ্ধে ওইদিন রাতে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার ২নং আসামী মানিক মাঝি (৫২) ও ৩নং আসামী সিফাত মাঝি (২৫)কে গ্রেফতার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, মামলায় অভিযুক্ত ২নং আসামী মানিক মাঝি ও ৩নং আসামী সিফাত মাঝিকে গ্রেফতারের পর রোববার সকালে তাদেরকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীরা গা-ঢাকা দিয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দলনেতা মাদক সম্রাট হীরা মাঝির বক্তব্য জানার জন্য তার ০১৮৬৬৯৯২৮৪২ নম্বরের মুঠোফোনে একাধীক বার কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।