চট্রগামে ছেলেদের হাতে খুন হওয়া ও লাশ গুমের ঘটনার রেস কাটতে না কটাতেই বরিশালের গৌরনদীতে ছেলে ও নিজ পুত্রবধুদের হাতে খুন হলেন হেরোনা বেগম (৬৩)। সোমবার রাতে সীল পাটার পূতো দিয়ে মাথায় আঘাত করে শাশুড়িকে হত্যা করেছে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে ধারনা করছেন।
বৃদ্ধা হেরোনা বেগমকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চলানোর সময় গৌরনদী মডেল থানা পুলিশে জালে ধরা পরেন নিহতের ছোট পুত্র সুমন প্যাদা ও পুত্র বধু রাখি বেগম ও তুলি বেগম এবং স্বামী হায়দার আলী প্যাদা। লোহমর্ষকর হত্যার বিচারের দাবি করেছেন এলাকাবাসী। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের ভাই মনির হোসেন সিকদার বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের চরদিয়াসুর গ্রামে হায়দার আলী প্যাদা ও হেরোনা বেগম দাম্পত্য জীবনে ২ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় পুত্র ইলিয়াস প্যাদাকে সৌদী আরব পাঠিয়ে ও অন্য সন্তানদের বিবাহ দিয়ে ভালো ভাবেই চলছিল তাদের সুখের সংসার। বৃদ্ধ বয়সে এসে হায়দার আলী প্যাদার রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সন্তান ও পুত্র বধুদের কাছে তারা বোঝা হয়ে দাড়ায়। এ নিয়ে প্রায়ই বৃদ্ধা হেরোনা বেগমের সাথে পুত্রবধু রাখি বেগম, তুলি বেগমের সাথে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত।
মামলার বাদি নিহতের ভাই মনির হোসেন সিকদার অভিযোগ করেন, প্রায়ই তার বোনের সাথে ছোট ভাইগ্না সুমন প্যাদা ও অপর ভাইগ্না বৌ রাখি বেগম, তুলি বেগম প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতো। গত ৫ দিন পূর্বে তার বোন হেরোনা বেগমকে মারধর করে। এ নিয়ে মনির সিকদার ওই বাড়িতে গিয়ে মিমাংসা করে আসেন। সোমবার ভাগ্নিরা তার মাকে দেখতে আসলে এ নিয়ে তার বোনের সাথে ঝগড়া ও গালমন্ধ করে পুত্রবধুরা।
এক পর্যায়ে তার ভাগ্নিরা রাগ করে ওই বাড়ি থেকে চলে যায়। সোমবার রাতে এ নিয়ে বাকবিতান্ডার এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃদ্ধা হেরোনা বেগমের মাথায় সীল পাটার পূতো দিয়ে মাথায় আঘাত করে। মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হেরোনা বেগম মারা যায়। হত্যা মামলা থেকে বাচার জন্য বাড়ির পাশে ছোট্র টয়লেটে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হাটু ভাজ করে ঝুলিয়ে রাখে।
মঙ্গলবার সকালে আত্মহত্যা কথা বলে ছেলে সুমন প্যাদা গৌরনদী মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি সময় সন্দেহ হয়। পুলিশ পুত্র সুমন প্যাদা, পুত্রবুধু তুলি বেগম, রাখি বেগম ও স্বামী হায়দার আলী প্যাদাকে আটক করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে।
ওই এলাকার বাসিন্দা সাহানুর বেগমসহ শত শত এলাকাবসি এ লোহমর্ষকর হত্যার বিচারের দাবি করেন।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আফজাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহত ভাই মনির হোসেন সিকদার বাদি হয়ে উল্লোখিত ৪ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরন করেছে।
গৌরনদী সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শারমিন আক্তার রাখী বলেন, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনহত ব্যবস্থা নেয়া হবে