বৃহস্পতিবার, ১২:২৩ অপরাহ্ন, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল

গৌরনদী প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২১ বার পঠিত

বরিশালের গৌরনদীর চারজন বিএনপি নেতাকে নিয়ে মঙ্গলবার দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত একটি সংবাদকে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং কল্পনাপ্রসুত আখ্যা দিয়ে বুধবার দুপুরে ওই পত্রিকার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে গৌরনদীতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিড়ি শ্রমিকদের একটি সংগঠনসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পৃথক দুটি সংগঠনের বিক্ষুব্দ সদস্যরা। মিছিলটি গৌরনদী বন্দরের প্রধান প্রধান গলিপথ প্রদক্ষিন করে।
জানাগেছে, গত মঙ্গলবার দৈনিক যুগান্তরে বরিশাল (উত্তর) জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ মিজানুর রহমান খান মুকুল, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব, গৌরনদী পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক কামরুজ্জামান খোকন ও সদস্য সচিব মোঃ ফরিদ মিয়াকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যার শিরোনাম ছিল “বহিস্কারের পরও বেপরোয়া নেতারা থামছেই না গৌরনদীর দখল সন্ত্রাস চাঁদাবাজী” ওই সংবাদ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গৌরনদী বিড়ি শ্রমিক সমবায় সমিতির শ্রমিকসহ গৌরনদী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতি ও ডিস এবং ওয়াইফাই ব্যবসায়ীদের সংগঠন গৌরনদী ডিজিটাল সিষ্টেম এর সদস্যরা।
তারা আলাদা আলাদা ব্যানার নিয়ে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে গৌরনদী বন্দরের সমবায় শ্রমিক বিড়ির ফ্যাক্টরীর গদিঘরের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলকারীরা দৈনিক যুগান্তরের বরিশাল ব্যুরো প্রধান আকতার ফারুক শাহিনকে অসৎ ও দুনীতিবাজ সাংবাদিক বলে আখ্যা দিয়ে তার বিচার দাবি করেন। একই সময় মিছিলে অংশগ্রহনকারীরা তার বিরুদ্ধে মুহুমুহু শ্লোগান দেন। তারা বলেন ওই মিথ্যা সংবাদকে পুজি করে বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেড়ে থাকা আওয়ামী দালালদের একটি অংশ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের পায়তারা করছে। সংবাদটি তৈরীর পেছনেও তাদের অর্থের বিনিয়োগ রয়েছে বলে দাবী করেন মিছিলকারীরা। তারা আরও বলেন, বরিশাল (উত্তর) জেলা বিএনপির সদস্য সচিবসহ গৌরনদী উপজেলা ও পৌর বিএনপির যে চারজন নেতাকে নিয়ে যুগান্তর অপপ্রচার চালিয়েছে তারা সবাই দলের দুঃসময়ের পরীক্ষিত কর্মী। ওই নেতাদের অভিযুক্ত করে বক্তব্য দেয়া গৌরনদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহ আলম ফকির দলের ভেতরে একজন সুযোগ সন্ধানী ও থানা পুলিশের দালাল। সে সারাক্ষন থানা পুলিশের দালালি নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। গৌরনদীর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে মিলে শাহ আলম ফকির শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন এ রকম একটি ছবি তুলে ধরে মিছিলকারীরা তার প্রতি ধিক্কার দেন। মিছিলকারীরা বলেন, সাংবাদিক শাহিনের কাজই হল বিএনপির ভেতরের সুযোগ সন্ধানী ও অসৎ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে কাছ থেকে টাকা নিয়ে ক্লিন ইমেজধারী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে কল্পকাহিনী লেখা।
মিছিল শেষে বিড়ি শ্রমিকদের মিছিলের নেতৃত্বদানকারী গৌরনদী বিড়ি শ্রমিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারন সম্পাদক মোঃ সরোয়ার ফকির বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমানের মদদে দখলদার আওয়ামী লীগ নেতারা গত ১৬ বছরে আমাদের প্রানের প্রতিষ্ঠান সমবায় শ্রমিক বিড়ি ফ্যাক্টরীকে দখল করে লুট-পাট চালিয়ে এটিকে ধংস করে দিয়েছে। আমরা দখলদার আওয়ামী লীগ নেতা লালন ফকিরের কাছ থেকে লুট-পাটের ২১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছি। মিজানুর রহমান মুকুলের সহযোগীতা নিয়ে আমরা এ কাজ করতে সক্ষম হয়েছি। গায়ের জোরে সমিতি দখল করে রাখায় সমিতির ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ফলে আমরা ওই টাকাটা একাউন্টে রাখতে ব্যর্থ হয়ে সমিতির সভায় রেজুলেশন করে সিদ্ধান্ত নিয়ে টাকাটা গৌরনদী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক মোঃ চুন্নু তালুকদারের একাউন্টে রেখেছি। অথচ যুগান্তর লিখেছে ওই টাকা মুকুল খান নিয়েছে। যা চরম মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই না।
আওয়ামী লীগ নেতা লালন ফকির বলেন, আমার কাছে থাকা সকল টাকা আমি সমিতির নতুন কমিটিকে বুঝিয়ে দিয়েছি। যুগান্তরকে আমি কোন অভিযোগ করিনি। আমার নামে মিথ্যা প্রচারনা চালানো হয়েছে।
ডিস এবং ওয়াইফাই ব্যবসায়ী স্বপন বর্নিক বলেন, মুকুল খানের বিরুদ্ধে ডিস ব্যবসা দখলের অভিযোগ করা হয়েছে। ২০-২৫ বছর পূর্বে গৌরনদীতে এ ব্যবসা শুরু হয়। মুকুল খান শুরু থেকেই আমাদের এ ব্যবসার একজন পাটনার। আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছর ধরে সাবেক মেয়র হারিছুর রহমান এককভাবে এ ব্যবসাটিকে দখল করে রেখেছিল। মুকুলখানসহ পাটনারদের কাউকেই লভ্যাংশ দেয়নি। গত উপজেলা উপজেলা নির্বাচনে মনির মিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হলে তিনি ব্যবসাটি নিয়ন্ত্রনে নেন। কিছু দিনের ব্যবধানে পৌর নির্বাচনে আলাউদ্দিন ভ‚ইয়া মেয়র হলে তার লোকজন পৌর এলাকায় এ ব্যবসার নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয় এ নিয়ে বিরোধে বিভিন্ন যায়গায় কেবল কেটে লাইন বিচ্ছিন করা হয়। তখন একটি অরাজক অবস্থা বিরাজমান ছিল। এর পর ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর মুকুল খানের সহযোগীতা নিয়ে আমরা কেবল ব্যবসাটাকে স্থির অবস্থানে এনেছি। এখনও কেউ লাভের মুখ দেখতে পারিনি। অথচ যুগান্তর বলছে, মুকুল খান এ ব্যবসা দখলে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যা সম্পূর্ন মিথ্যা।
গৌরনদী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির আহবায়ক চুন্নু তালুকদার বলেন, আমাকে আহবায়ক করে ব্যবসায়ী সমিতির কমিটি করা হয়েছে। অথচ যুগান্তর লিখেছে মুকুল খান সমিতি দখল করে সভাপতি হয়েছে। যা চরম ন্যাক্কারজনক মিথ্যাচার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com