বরিশালের গৌরনদী পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন চলাকালে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে মারধর ও ছাত্রলীগ সভাপতিকে কুপিয়ে-পিটিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে।
এর মধ্যে গুরুতর আহত গৌরনদী পৌরসভার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম সরদারকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
আর আহত কাউন্সিলর স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়দের তথ্যানুযায়ী, বুধবার সকালে কাসেমাবাদ হাই মার্কেট থেকে কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যাচ্ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা মাসুম। এসময় স্থানীয় বখাটে সোহান খান ও মিদুল সরদারের নেতৃত্বে মোবাইল ফোন মার্কার সমর্থক রাসেল রাঢ়ী, রাজিব রাঢ়ীসহ ১০-১২ জন তার ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মাসুমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা ধাওয়া করে সোহান খানকে আটক করে এবং মারধর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে সকালে গৌরনদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পালরদী মৎস্যবীজ উৎপাদান খামার কেন্দ্র এলাকায় হামলার শিকার হন স্থানীয় কাউন্সিলর লিটন বেপারী। হামলা চালিয়ে তাকে মারধরের পাশাপাশি পোশাকও ছিঁঢ়ে ফেলা হয়।
আহত লিটন বেপারী বলেন, নারিকেল গাছ প্রতীকের জন্য কাজ করায় ২০-২৫ জন এসে কেন্দ্রের সামনেই আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হত্যার উদ্দেশ্যে ওরা যখন মারছিল তখন আমাদের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কেন্দ্র এলাকায় মেয়র পদের নারিকেল গাছ প্রতীক ও মোবাইল ফোন মার্কার সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা, মারামারি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পক্ষেকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এর পরপরই ওই এলাকায় দুটি বিকট শব্দ শোনা যায়।
স্থানীয়দের দাবি, হাতবোমা ফাটানো হয়েছে, তবে কারা ফাটিয়েছে সে বিষয়ে কেউ কিছু জানাতে পারেননি তারা।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন মোবাইল ফোন মার্কার প্রার্থী জয়নাল আবেদীন। তিনি দাবি করেছেন, তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে কিছু ঝামেলা হয়েছিল, কিন্তু কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।
আর নারিকেল গাছ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আলাউদ্দিন ভূইয়ার অভিযোগ, মোবাইল ফোন মার্কার প্রার্থী জয়নাল আবেদীনের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের জন্য মরিয়া হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, আমার ভোটারদের চিহ্নিত করে কেন্দ্রে না যেতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়। জয়নাল সমর্থক স্থানীয় ও বহিরাগতরা নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করে এই হুমকি দেয়। আমাদের লোকজনের ওপর সন্ত্রসী হামলা ঘটানো হয়েছে।
আর প্রশাসনের দাবি, তারা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( গৌরনদী সার্কেল) শারমিন সুলতানা রাখি জানান, কোনো অনিয়মের সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। পালরদীতে পরপর বিকল দুটি শব্দের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
গৌরনদী পৌরসভার মেয়র হারিছুর রহমান পদত্যাগ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে হেরে গেছেন। তার পদত্যাগের কারণে মেয়র পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। উপনির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।