গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের প্রবেশ পথ খুলে দেওয়ার পর হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন তিন লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি।৪৭০ দিন পর নিজেদের বাড়িতঘরে ফিরেছেন তারা।গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন লাখেরও বেশি মানুষ গাজার দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তবে ফিলিস্তিনিরা উত্তরাঞ্চলে ফিরে এসে ‘ধ্বংসযজ্ঞ ছাড়া আর কিছুই’ খুঁজে পাচ্ছে না। তারপরও প্রায় ১৫ মাস পর নিজেদের এলাকায় ফিরতে পেরে উচ্ছ্বসিত এখানকার বাসিন্দারা।
এর আগে, স্থানীয় সময় সোমবার সকাল ৯টায় সামরিক অঞ্চল নেৎজারিম করিডোর গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। এর দুই ঘণ্টা পর পায়ে হেঁটে প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
এর পর থেকেই নেৎজারিম করিডোর দিয়ে উত্তর গাজায় আসতে শুরু করেন হাজারো ফিলিস্তিনি। অনেকেই ঘোড়া কিংবা গাধার গাড়িতে নিজেদের মালপত্র নিয়ে আসেন। উত্তর গাজার কেন্দ্রীয় শহর গাজা সিটির প্রধান সড়কের একটি ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে ‘গাজায় স্বাগতম’ লেখা ব্যানার টাঙানো ছিল এ সময়।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবেশ পথ খুলে দেওয়ার দুই ঘণ্টার মধ্যেই দুই লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ হেঁটে গাজায় ফিরেছে। গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ঘরে ফিরতে সহযোগিতা করার জন্য সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মী নিয়োগ করেছে ফিলিস্তিনি সরকার।
এদিকে, জাতিসংঘের বিশেষ দূত এবং স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের দমন-পীড়ন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এর কোনো শেষ দেখা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ৩১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এক লাখ ১১ হাজার ৪৯৪ জন আহত হয়েছে। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বর্বর এ বাহিনীর নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।