অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বেসামরিকদের ওপর নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস রাসায়নিক ব্যবহার করছে ইসরায়েল। তদন্তের পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গত ৭ অক্টোবর শনিবার ইসরায়েল ভূখণ্ডে হামলা চালায় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামাসের হামলার জবাবে পাল্টা রকেট ও বোমা হামলা করে ইসরায়েলের বাহিনী। গাজা উপত্যকার নাগরিকরা আতঙ্কে ঘর ছাড়তে শুরু করেন। এরই মধ্যে গাজা উপত্যকায় বিদ্যুৎসহ খাদ্য, পানি ও জ্বালানি সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ক্রাইসিস এভিডেন্স ল্যাবরেটরি জানিয়েছে গাজা উপত্যাকায় ইসরায়েলের নিক্ষেপ করা বোমায় সাদা ফসফরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেছে। বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজা বন্দর ও নিকটবর্তী হোটেলে হওয়া হামলার ভিডিও ও ছবি বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে দেখার চেষ্টা করেছেন তারা। বিশ্লেষণ করেছেন স্যাটেলাইট ছবিও।
তারা বলছেন, বোমায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার করা হয়েছিল। যার কারণে বিস্ফোরণের পর সাদা ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়।
সাদা ফসফরাস কী?
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, বেসামরিক অধ্যুষিত এলাকায় সাদা ফসফরাস ব্যবহার নিষিদ্ধ। এর কারণে ফুসফুসে ক্ষত হতে পারে এবং নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে।এ ছাড়া এই রাসায়নিকে চামড়ায় তৃতীয় মাত্রা পর্যন্ত পুড়ে যেতে পারে। অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসলেই এখানে আগুন লেগে যেতে পারে। আর বোমার সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাতে আগুনের মাত্রাও বেশি থাকে। ফসফরাস বোমার কারণে সৃষ্ট আগুন ভয়াবহ হয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
সাদা ফসফরাসের কারণে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা অনেক কঠিন হয়। তারা ঠিকমতো শ্বাসও নিতে পারেন না। এই রাসায়নিক অত্যন্ত সংক্রামক। তাই দগ্ধ রোগীদের আলাদা করে চিকিৎসা দিতে হয়।
জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী বেসামরিক এলাকাতে এই রাসায়নিক নিষিদ্ধ। তবে সামরিক স্থাপনায় ক্যামোফ্লাজ হিসেবে এই ধোঁয়ার ব্যবহারে বাধা নেই।