দেশের জনগণ জেগে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলেছেন, লড়াই শুরু হয়ে গেছে, মানুষ নেমে পড়েছে, তাদের আরও জাগাতে হবে। এখন আরও শক্তি সঞ্চয় করে চলমান আন্দোলনে নিহত সাত নেতার রক্তের ঋণ পরিশোধে আমাদের তৈরি হতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনাসভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম এ সভা আয়োজন করে। এতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা কাদের গনি চৌধুরী, ফজলুর রহমান খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতার নামে নতুন করে মামলা শুরু করা হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিচারপতিদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, দয়া করে ন্যায়বিচার করুন। কারণ, এদেশে বহু প্রমাণ আছে, বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে সেই জনতা। কেউই পার পাবেন না।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে পুলিশসহ প্রশাসন যন্ত্র দিয়ে আগের রাতে সব ভোট চুরি করে নিয়ে গেল। হঠাৎ করে জাপানের রাষ্ট্রদূতও বলল, আগের রাতে নির্বাচনের দৃষ্টান্ত তিনি এর আগে শোনেননি। এতে করে (সরকার) গায়ে খুব লেগেছে, বলছে (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী), আমরা জাপান রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছি। কিন্তু জাপান রাষ্ট্রদূত বলছেন, তার সঙ্গে ওই প্রতিমন্ত্রীর দেখাই হয়নি। এরা (সরকার) মনে করে, তারা লুট করবে, চুরি করবে, খুন করবে, কেউ কিছু বলতে পারবে না।
দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার মতো টাকা তাদের কাছে নেই। ডলার সংকটে এলসি খুলতে পারছেন না। যে দেশের সরকারের লোকেরা লুট করে অর্থ পাচার করে দেয়, সেই দেশের অর্থনীতির আর কী থাকে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে লুটেরার দল। সে কারণেই তারা শঙ্কিত। আমরা বিভাগীয় ১০ শহরে সমাবেশ করব, ঢাকা আমাদের শেষ সমাবেশ। ঢাকার সমাবেশ নিয়ে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যার ফলে আবোলতাবোল বলতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, খেলার নিয়ম আছে, নিয়মের বাইরে গেলে নাকি খবর আছে। এই খেলার রেফারি কে? অবশ্যই বিএনপি। সুতরাং খেলার নিয়ম কী হবে, তা আমরা ঠিক করব। খেলা নির্ধারণ করার তোমরা কেউ নও।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে একটা লাশ দাফন করতে না করতেই আরেকট লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে।’ জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘জঙ্গি ধরার নাম করে ১০ ডিসেম্বরের আগে বিএনপি নেতাদের বাড়িতে চিরুনি অভিযান হবে কিনা, নিপীড়ন-নির্যাতন শুরু হবে কিনা, সেসব আলামত জঙ্গি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব একটি গভীর জায়গা থেকে বলেন খেলা হবে। তার আলামত নানা দিক থেকে নানাভাবে ফুটে উঠছে। জঙ্গিরা হাতকড়া ও পায়ে বেড়ি পরা অবস্থায় পুলিশি বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে পালিয়ে গেল- এটাকে মানুষ নাটক মনে করছে।’