বুধবার, ০২:৪২ অপরাহ্ন, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরনে গৌরনদীতে স্মরন সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি

খাবারে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২
  • ৬৯ বার পঠিত

আটা, চিনি, মুরগি, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন ও সবজিসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে। এতে আরও বেকায়দায় পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। কারণ, গত এক বছরে জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে, আয় সে হারে বাড়েনি।

রাজধানীর কদমতলী এলাকায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন মোসাম্মত লিপি বেগম। দুই হাজার ২০০ টাকা মাস চুক্তিতে চার বাসায় কাজ করেন তিনি। সে হিসাবে মাসে তার আয় আট হাজার ৮০০ টাকা। স্বামী নেই। দুই সন্তান ও মাকে নিয়ে এই টাকাতেই সংসার চালাতে হয় লিপি বেগমকে। সংসারের হাল তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘মাসে একবার মাংস কিংবা একটু ভালো খাবার দূরে থাক, তিনবেলা খাবার জোগাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। ৬০ টাকা কেজির নিচে বাজারে কোনো তরকারিই পাওয়া যায় না।’
বাজার করতে ঘাম ছুটে যাচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মী মো. মিজানুর রহমানেরও। রায়েরবাগের বাসিন্দা মিজান বলেন, ‘মাছ-মাংস দূরে থাক, চাল, আটা, তেল, আদা রসুনের দামও আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। ডিমের দামও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেড়েছে লবণের দামও। যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সামান্য বেতনের টাকায় এখন আর পারছি না। বাধ্য হয়ে প্রতিমাসে বন্ধু ও স্বজনদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে চলতে হচ্ছে।’

বাজারে বাড়তি খরচের চাপে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্তও। অনেকেই খাবারের তালিকা ছোট করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাজারে গিয়ে ফাঁকা ব্যাগ নিয়েই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে তাদের।

রাজধানীর বাজার চিত্র বলছে, মাসের ব্যবধানে মোটা চালের দাম সামান্য কমলেও চিকন চালের দাম এখনো বাড়তি। ৬৪ টাকার নিচে মিলছে না চিকন চাল। খোলা আটার দাম দুই সপ্তাহে ৫ টাকা এবং এক বছরে ২৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খোলা আটার কেজি এখন ৫৫ টাকায় ঠেকেছে। প্যাকেট আটার কেজি হয়েছে ৬০ টাকা। চিনির দামও বাড়তি। পেঁয়াজের কেজি ৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। দেশি রসুনের দাম মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। আদার দামও অনেকখানি বাড়তি। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮৫ টাকায় ঠেকেছে, যা এক মাস আগেও ছিল ১৬০ টাকা। ফার্মের ডিমের ডজন হয়েছে ১৫০ টাকা।

মান ও জাতভেদে বেগুনের কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। কচুর লতির কেজি ৮০ টাকা। ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে টমেটো। গাজরের কেজি ১২০ টাকা। বরবটি ৮০ টাকা ও মুলার কেজি ৬০ টাকা। কাঁচাকলার হালি উঠে গেছে ৪০ টাকায়। করলার কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা। একটি লাউ কিনতে লাগছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। শিমের কেজি ১২০ টাকা। ১৫ টাকার নিচে পাওয়া যায় না শাকের আঁটি।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে মাসের ব্যবধানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি চিত্র। সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ বলছে, মাসের ব্যবধানে খোলা আটার দাম ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় চিনির দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ। ব্রয়লার মুরগি ১২ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ফার্মের ডিম ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম প্রায় ৬ শতাংশ বেড়েছে। দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। দেশি আদার দাম ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। আমদানিকৃত হলুদের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমাদের দেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অতিরিক্ত মুনাফা করার একটা প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। অতি প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর বেলায় এটা বেশি দেখা যাচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিংয়ের ত্রুটির সুযোগ নিয়েই ব্যবসায়ীরা পণ্যের কারসাজি করছেন। এর মাশুল দিতে হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে।’

গোলাম রহমান আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমতে শুরু করেছে। দেশের বাজারে যেভাবে দফায় দফায় লাফিয়ে বাড়ছে, সেটা অস্বাভাবিক। অপরদিকে ডিম ও ব্রয়লার মুরগি নিয়ে কিছুদিন আগেও যে কারসাজি হয়েছে, তা ভোক্তা অধিকারের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। একইভাবে পূর্বে ভোজ্যতেলের বেলাতেও কারসাজির তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ ক্ষেত্রে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। জরিমানা করা হলেও তা পরিমাণে কম হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা বারবার কারসাজি করার ঝুঁকি নিচ্ছেন। তাই কারসাজিকারীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

পণ্য সরবরাহের এক-চতুর্থাংশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এটা করা গেলে পণ্যমূল্য লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারবে না। তবে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ও চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com