বৃহস্পতিবার, ০৩:০১ অপরাহ্ন, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যাচ্ছে বিএনপি আজকেই টাকা না দিলে দুর্বার রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি বাতিল ‘সংক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা’র মিছিলে জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শেখ হাসিনার স্লোগান লেখা নিষিদ্ধ প্যাড ব্যবহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক বরখাস্ত ১৭ বছর পর কারামুক্ত বিএনপি নেতা বাবর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ‘শহীদদের’ প্রথম গেজেট প্রকাশ শিশুর বাম চোখের বদলে ডান চোখে অপারেশনকারী চিকিৎসক গ্রেপ্তার সাজামুক্ত হলেও তারেক রহমানের সামনে আরও দুই বাধা ফের রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র ডা. ফয়েজ হত্যা : ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ

কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় ভিসা সংকটে বাংলাদেশিরা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৪ বার পঠিত

ভারত ভ্রমণে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা দেওয়ার হার ব্যাপক হারে কমিয়ে দিয়েছে ভারত৷ এর ফলে কেবল পর্যটকরাই নন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থী এবং রোগীরাও৷

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে ভারত ভ্রমণে আগ্রহী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে৷

রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ২০২৪ সালের আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর, নিরাপত্তার কারণে বাংলাদেশ জুড়ে ভারতীয় ভিসাকেন্দ্রগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাপক ভারত-বিরোধী বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন ভিসা পরিষেবা স্থগিত করে ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি পাসপোর্ট ফেরত দেয়৷

জানুয়ারি থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট এবং খুলনায় পাঁচটি ভিসাকেন্দ্র আবার চালু হয়েছে। কিন্তু এসব কেন্দ্রে শুধুমাত্র জরুরি এবং মানবিক আবেদন বিবেচনা করা হচ্ছে।

ভারত বাংলাদেশে ১৫টি ক্যাটিগরিতে ভিসা দিয়ে থাকে, যার মধ্যে একটি ‘জরুরি পরিষেবা’৷ ভিসা কেন্দ্রগুলোর ধারণা, দৈনিক ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট সাত হাজার থেকে কমে পাঁচ থেকে সাতশতে নেমে গেছে। পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে সে বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ ভিসা কার্যক্রম শুরু করা হবে৷

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, আপাতত পূর্ণাঙ্গ ভিসা পরিষেবা স্থগিতই থাকবে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয় নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে৷

ভারত সীমান্তের পাঁচটি স্থানে বেড়া নির্মাণের পরিকল্পনা করছে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার মো. নূরুল ইসলামকে তলব করে ভারত। তাকে জানানো হয়েছে যে সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

এই অচলাবস্থার ফলে দুই দেশের মধ্যে নাগরিকদের ভ্রমণ ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে ভারতের পর্যটন ও চিকিৎসা খাতেও।

চলমান সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব ভারতে চিকিৎসা পর্যটনের ওপরও পড়েছে। অনেক বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। একটি উদার ভিসা নীতির ফলে রোগীদের সঙ্গে তাদের পরিবার বা বন্ধুদেরও ভ্রমণের সুযোগ ছিল।

কলকাতা, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুর মতো প্রধান শহরগুলোতে বাংলাদেশি চিকিৎসা পর্যটকদের সংখ্যা কমে গেছে। ভারতের প্রধান হাসপাতালগুলোতে বাংলাদেশি রোগীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমার কথা জানিয়েছে তথ্য-বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান কেয়ারএজ রেটিং। কিছু প্রতিবেদন অনুসারে এ সংখ্যা ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।

ভারতের সাশ্রয়ী চিকিৎসা নিতে আসা হাজার হাজার বাংলাদেশি রোগীর ওপর এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। অনেকেই এখন থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং তুরস্কে বিকল্প চিকিৎসার উপায় খুঁজছেন।

পাকিস্তানে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত অজয় ​​বিসারিয়া ডিডাব্লিউকে বলেন, দেশগুলোর মধ্যে চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ প্রায়শই রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণেই ঘটে৷ বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত একাধিক সমস্যা সমাধানের জন্য ভারত ও বাংলাদেশকে একটি বিস্তারিত সংলাপে অংশ নিতে হবে।

তিনি মনে করেন পুরো বিষয়টিই নির্ভর করছে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা পুনর্গঠনের ওপর৷ বিসারিয়া বলেন, এসব সমস্যার সহজেই সমাধান সম্ভব। তবে ২০২৫ সালে চলাচল শুরু এবং ভিসা ব্যবস্থা সহজ করার জন্য কিছু গ্রহণযোগ্যতা, সংলাপ এবং আলোচনার প্রয়োজন হবে।

ফিনল্যান্ড, রোমানিয়া এবং চেক প্রজাতন্ত্রের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতে পড়াশোনা করতে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও ভারতের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। এই দেশগুলোর অনেকেরই বাংলাদেশে দূতাবাস নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের অনেকের ভিসা আবেদন জমা এবং পরিচয় ভ্যারিফিকেশনের জন্য ভারতে ভ্রমণ করতে বাধ্য হন।

ভারতের ভিসা পাওয়া কঠিন হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীই এখন ইউরোপের নানা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে না পারার আশঙ্কায় রয়েছেন। দেড় হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পেলেও সময়মতো ভিসা আবেদন করতে না পারায় অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন৷

ডিসেম্বরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ইউরোপের দেশগুলোকে নয়াদিল্লি থেকে ঢাকা বা অন্য কোনো প্রতিবেশী দেশে তাদের ভিসাকেন্দ্র স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com