পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে রাতের আঁধারে বালু তুলে নিয়ে রীতিমতো পুকুরে পরিণত করেছে একটি চক্র। যে কারণে ব্যস্ত সৈকত এলাকায় পর্যটকদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাসহ সৌন্দর্য হারাচ্ছে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের লীলাভূমি কুয়াকাটা। তবে প্রশাসন বলছে, দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (২ জানুয়ারি) সকালে হঠাৎ এ গর্ত দেখে হতভম্ব হন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোববার (১ জানুয়ারি) রাতে নুর মোহাম্মদ নামে এক বালু ব্যবসায়ী কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন পশ্চিম পাশে ড্রেজার মেশিন বসান। কিন্তু সকালে এসে মেশিন না দেখলেও সৈকতের একটি অংশ পুকুরে পরিণত করে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় মহিউদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, গতকাল নুর মোহাম্মদ নামে ওই লোক এখানে মেশিন লাগালে শাহজালাল নামে পাশের মার্কেট মালিক নিষেধ করেন। পরে সকালে এসে দেখি, বিশাল গর্ত এখানে। মনে হয় গভীর রাতে বালু কেটে নিয়ে গেছে।
ফরিদপুর থেকে আসা পর্যটক ফয়সাল বলেন, আমরা এখানে একটু বসতে চেয়েছিলাম কিন্তু এত বড় গর্ত থাকায় ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ভয় হয় তাই চলে যাচ্ছি। তবে এখানে প্রশাসনকে সুনজর দেওয়া দরকার। তা না হলে কুয়াকাটা থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবেন।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুর মোহাম্মদ বলেন, আমি ড্রেজার মালিক। জমির মালিক শাহজালাল ও সাজিদুল ইসলাম হিরু বলেছে তাই মাটি কেটে হিরুর মার্কেটের নিচে দিয়েছি। আমাকে যা বলবে, আমিতো তাই করবো।
এ বিষয়ে পাশের মার্কেট মালিক শাহজালাল মিয়া বলেন, যে জায়গা থেকে বালু কাটা হয়েছে ওই জায়গাটা আমার রেকর্ডিয় সম্পত্তি ছিল। এখন না হয় সৈকত এরিয়ায় পড়েছে। আমি তো আর বালু নিইনি যে কাটতে বলবো। আমাকে বলেছে অন্য জায়গা থেকে ট্রাক দিয়ে বালু এনে এখানে রেখে বিভিন্ন জায়গায় দেবে। কিন্তু এখান থেকে বালু তোলায় আমিও ক্ষুব্ধ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাজিদুল ইসলাম হিরু বলেন, আমার নুর মোহাম্মদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে যে সে আমার মার্কেটের নিচে দূর থেকে বালু এনে ভরাট করে দেবে। কিন্তু সে তা না করে সৈকতের বালু কেটেছে। এটার জন্য আমি তাকে গর্ত ভরাট করে দিতে বলেছি। কিন্তু এখনো সে দেয়নি।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পেয়েছি। পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।