কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের বিনোদনে নতুন রাইড হিসেবে যোগ হয়েছে বিমানাকৃতির গাড়ি। নতুন প্রযুক্তি সম্পন্ন জ্বালানীবিহীন এ রাইড বাহন হিসেবে ব্যবহার করতে পেয়ে অনেকটা উচ্ছসিত পর্যটকরা।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে ২৭ বছর বয়সী মাহবুবুর রহমান শাওন এ গাড়ির আবিষ্কারক।
পর্যটকদের বিনোদনে নতুন মাত্রা যোগ করতে দীর্ঘ ৬ মাস প্রচেষ্টার পর তৈরি করেছেন বিমানাকৃতির গাড়ি। সম্পূর্ণ জ্বালানীবিহীন এ গাড়িটি চলছে সোলার সিস্টেমে।
ফাইবার এবং অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা তৈরি এ গাড়ির বিশেষত্ব হচ্ছে নতুন কিছু প্রযুক্তি। ভুলক্রমে কোনো মানুষ এই গাড়ির সামনে পড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজ থেকেই হর্ন দেবে এবং থেমে যাবে।
গাড়িটি চুরি যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। চালকবিহীন কোনো মানুষ গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করলে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে মালিককে জানান দেবে।
শাওন শুধু বিমানাকৃতির এই গাড়িই নয়, এর আগে তিনি তৈরি করেছেন সি-প্লেন, সিকিউরিটি এলার্ম, স্মার্ট সুইচ, মোবাইল সুইচ, স্মার্ট ফ্রিজ, ড্রোন বিমান এবং সি-প্লেনের আদলে হোভারক্রাফট।
বিমানাকৃতির গাড়িটি তৈরিতে শাওনের ব্যয় হয়েছে ৪ লাখ টাকা। গাড়িটিতে একসঙ্গে চালকসহ ৪ জন চড়তে পারে। এটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে উন্মুক্তের পর গাড়িটির কাছে ভিড় করছেন পর্যটকরা। কেউ তুলছেন ছবি কেউবা আবার ঘুরছেন এই গাড়িতে চড়ে।
যশোরের ঝিকরগাছা থেকে আসা পর্যটক লামিয়া জানান, আমরা বন্ধুরা মিলে কুয়াকাটায় ভ্রমনে এসেছি। সবকিছুই বেশ ভালো লেগেছে। তবে আমাদের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলো বিমানাকৃতির গাড়ি।
আমরা বিমানে না উঠতে পারলেও বিমান গাড়িতে চড়ে বিমানে উঠার স্বাদ নিয়েছি। এই গাড়িতে চড়া বেশ মজার ছিলো।
টাঙ্গাইল থেকে আসা পর্যটক সোনিয়া আক্তার জানান, এখানে এসেই এই গাড়িটি আমাদের নজরে আসে। এই গাড়িটির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছি এবং পরিবারের সবাই একসঙ্গে ঘুরেছি। বিমানাকৃতির গাড়ির সঙ্গে সময় কাটানো বেশ আনন্দদায়ক ছিলো।
শাওন বলেন, গাড়িটি তৈরিতে আমার পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছি। আমার বাবা আমাকে সম্পূর্ণ আর্থিক সহায়তা করেছেন। তবে আমার প্রবল ইচ্ছা গাড়িটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা।
যদি সরকার সহজ শর্তে আমাকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ দেয় তাহলে আমাদের জমি বিক্রি করে আরও ৫০ লাখ মোট ১ কোটি টাকা দিয়ে এটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করতে পারবো।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, শাওন নতুন গাড়ি তৈরি করে সারা জাগিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।