আইরিশ এক নিয়ন্ত্রক সংস্থা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইন্সটাগ্রামকে বড় অংকের জরিমানা করেছে। তদন্ত করে সংস্থাটি জানতে পারে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর তথ্য গোপনীয়তা নিয়ম লঙ্ঘন করে মাধ্যমটি কিশোর-কিশোরীদের ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার করেছে।
আয়ারল্যান্ডের ডেটা সুরক্ষা কমিশন সোমবার ই-মেইলের মাধ্যমে বলেছে, কোম্পানিটিকে ৪০ কোটি ৫০ লাখ ইউরো জরিমানা করার জন্য গত সপ্তাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও সম্পূর্ণ বিবরণ আগামী সপ্তাহের আগে প্রকাশ করা হবে না।
লুক্সেমবার্গের নিয়ন্ত্রক সংস্থা গত বছর অ্যামাজনকে ৭৪ কোটি ৬০ লাখ ইউরো জরিমানা করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর গোপনীয়তা নিয়মের অধীনে জারি করা বর্তমান জরিমানাটি দ্বিতীয় বৃহত্তম।
ইনস্টাগ্রামের প্রধান কোম্পানি মেটা বলেছে, যেহেতু তদন্তটির সাথে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জড়িত ছিল তাই ‘এই জরিমানা কীভাবে গণনা করা হয়েছে তার সাথে আমরা একমত নই এবং এর বিরুদ্ধে আমরা আপিল করতে চাই।’
ই-মেইল ঠিকানা এবং ফোন নম্বরসহ ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত বিবরণ কিভাবে ইনস্টাগ্রাম প্রদর্শন করে তার ওপর কেন্দ্র করে আইরিশ নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্ত করা হয়। ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারের সর্বনিম্ন বয়স ১৩ বছর।
একজন ডেটা বিজ্ঞানীর ১৮ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীরা তাদের অ্যাকাউন্টকে বিজনেস অ্যাকাউন্টে পরিবর্তিত করছে বিষয়টি নজরে আসে। তিনি দেখতে পান, এই ব্যবহারকারীদের যোগাযোগ তথ্য তাদের প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা আপাতদৃষ্টিতে তাদের প্রোফাইলে কতগুলো লাইক পড়েছে তা দেখার জন্য এমনটা করে থাকতে পারে। তবে পূর্বেই মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে ইনস্টাগ্রাম এ সেবাটি কিছু দেশে বন্ধ করে দিয়েছে।
ইনস্টাগ্রাম বলেছে যে তদন্তটি এক বছরেরও বেশি আগে হালনাগাদ করা পুরানো সেটিংসের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে এবং এরপর থেকে মাধ্যমটিতে কিশোর-কিশোরীদের জন্য বেশকিছু গোপনীয়তার সেবা চালু করা হয়েছে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে- অ্যাকাউন্ট খোলার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের সেটিং প্রাইভেট অপশনে থাকবে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, ‘আমরা সাবধানে বাকি সিদ্ধান্তের পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেটা গোপনীয়তা নিয়মের অধীনে আইরিশ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি কোম্পানির প্রধান নিয়ন্ত্রক। যাদের ইউরোপীয় সদর দফতর ডাবলিনে অবস্থিত।
গত বছর সংস্থাটি হোয়াটসঅ্যাপকে ২২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো জরিমানা করেছে। অন্যান্য মেটা কোম্পানির সাথে ব্যবহারকারীদের তথ্য ভাগাভাগি করায় স্বচ্ছতার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছিল।
সূত্র : ইউএনবি