রবিবার, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন আর নেই

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১০ বার পঠিত

কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। খবর পিটিআইর

আজ সোমবার জাকির হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, ওস্তাদ জাকির হোসেন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।

জাকির হোসেন দীর্ঘদিন রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন বলে তার ব্যবস্থাপক নির্মলা বাচানী এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। তিনি পিটিআইকে বলেন, ফুসফুসজনিত অসুস্থতার জন্য দুই সপ্তাহ আগে জাকির হোসেনকে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

এর আগে গতকাল রোববার রাতে জাকির হোসেনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোক প্রকাশের কথাও জানানো হয়। পরে আমির আউলিয়া নামের একজন এক্সে এক পোস্টে বলেছেন, তিনি জাকির হোসেনের ভাতিজা। জাকির হোসেন মারা যাননি। চাচার শারীরিক সুস্থতার জন্য তারা সবার কাছে দোয়া চান।

এর পরপর ওস্তাদ জাকির হোসেনের বোন খুরশিদ আউলিয়া পিটিআইকে বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমার ভাই গুরুতর অসুস্থ। আমরা ভারত ও বিশ্বব্যাপী তার সব ভক্ত-অনুরাগীর প্রতি তার সুস্থতার জন্য দোয়া করতে অনুরোধ করছি।’

ভারতীয় ধ্রুপদি সংগীতের একজন পুরোধা হিসেবে বিবেচনা করা হয় জাকির হোসেনকে। কিংবদন্তি তবলাবাদক আল্লারাখার প্রথম সন্তান জাকির হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে ভারতের মুম্বাই শহরে। ৩ বছর বয়স থেকে বাবার কাছে তবলায় তার হাতেখড়ি। ১২ বছর বয়সে বাবার সঙ্গে প্রথম কনসার্ট। সেই থেকে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে ভারতজুড়ে। তিনি তার বাদ্যশৈলীর মধ্য দিয়ে পূর্ব ও পশ্চিমের সংগীতজগৎকে খুব কাছাকাছি আনতে পেরেছেন।

সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেন জাকির হোসেন। ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। শুরু হয় তার আন্তর্জাতিক সংগীতাঙ্গনে বিচরণ। ১৯৭৩ সালে জর্জ হ্যারিসনের লিভিং ইন দ্য ম্যাটেরিয়াল ওয়ার্ল্ড অ্যালবামে অংশগ্রহণ তাকে এনে দেয় এক বিরাট স্বীকৃতি। তার পর থেকেই বহু খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী যেমন জন ম্যাকলাফলিন, মিকি হার্ট, বিল ল্যাসওয়েল, ভ্যান মরিসন, জো হেন্ডারসনসহ আরও অনেকের সঙ্গে তবলা পরিবেশন করেন তিনি।

সংগীতে তার কর্মজীবনের সিংহভাগজুড়ে রয়েছে ভারতীয় ধ্রুপদি সংগীত। তবলায় তিনি সংগত করেছেন পণ্ডিত রবিশঙ্কর, ওস্তাদ আলী আকবর খাঁ, শিব কুমার শর্মা বা কত্থক নৃত্যশিল্পী বিরজু মহারাজকে। ১৯৯২ সালে জাকির হোসেন প্রতিষ্ঠা করেন ‘মোমেন্ট রেকর্ড’৷ এর মাধ্যমে তিনি সংগীতানুরাগীদের উপহার দিয়েছেন ভারতের ধ্রুপদি সংগীতের খ্যাতিমান সেরা সংগীতশিল্পীসহ সমকালীন বিশ্বসংগীত।

২০০৬ সালে ‘মোমেন্ট রেকর্ড’–এর মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবাম ‘গোল্ডেন স্ট্রিং অব দ্য সরোদ’ গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, গ্র্যামি ছাড়াও আরও বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জাকির হোসেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’–এর অন্যতম সদস্য ছিলেন ওস্তাদ জাকির হোসেনের বাবা আল্লারাখা খান।

জাকির হোসেন দীর্ঘদিন রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন বলে তার ব্যবস্থাপক নির্মলা বাচানী এর আগে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। তিনি পিটিআইকে বলেন, ফুসফুসজনিত অসুস্থতার জন্য দুই সপ্তাহ আগে জাকির হোসেনকে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com