বাংলাদেশে নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয় তা নিশ্চিত করার আড়ালে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে রাশিয়া। নির্বাচনের পর বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো কাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা চালাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র- এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটি।
এক বিবৃতিতে গত শুক্রবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহে নিষেধাজ্ঞাসহ কয়েকটি পদ্ধতিতে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে ওয়াশিংটন।
বিবৃতিতে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশে আরব বসন্তের মতো পরিস্থিতি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তার আগে (আগামী কয়েক সপ্তাহে) বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ আরও কয়েকটি চাপ প্রয়োগ করতে পারে ওয়াশিংটন। বাইডেন প্রশাসনের টার্গেট হতে পারে বাংলাদেশের প্রধান শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার দায়ে অনেক কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।’
অকাট্য প্রমাণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র এসব অভিযোগ আনবে বলে মন্তব্য করেছেন জাখারোভা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, সড়কে যান চলাচল বন্ধ, বাস পোড়ানো এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এসব ঘটনার সঙ্গে ঢাকায় পশ্চিমা একটি কূটনৈতিক মিশনের সন্দেহজনক কার্যকলাপের সংযোগ দেখতে পাচ্ছি। বিশেষ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরোধীদের সঙ্গে বৈঠক, যা নিয়ে গত ২২ নভেম্বরের ব্রিফিংয়ে আমরা কথা বলেছি।’
এটি রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিক বিবৃতি। গত মাসে, মারিয়া জাখারোভা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অযৌক্তিক অতিসক্রিয় ভূমিকা এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তার হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেছিল।
সেদিন তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অক্টোবর মাসে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’ যদিও ওয়াশিটংনের তরফে সরাসরি মস্কোর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ নির্বাচনকে ঘিরে ওয়াশিংটন একটি আখ্যান তৈরি করেছে। এই অজুহাতে মে মাসে ভিসা নীতি ঘোষণা করে। ওয়াশিংটন বলেছে যে, তারা বাংলাদেশের কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয় কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।
হাসের কার্যক্রম সমালোচনার মুখে পড়েছে কিন্তু বিএনপি এবং কট্টরপন্থী মিত্র জামায়াতে ইসলামী তাকে স্বাগত জানিয়েছে, যারা তাকে ‘বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু’ হিসাবে স্বাগত জানিয়েছে।