বুধবার, ০১:৫১ অপরাহ্ন, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

কবি সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্মবার্ষিকী আজ

শামীম লাবুঃ
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩
  • ৭৭ বার পঠিত

নারী জাগরণের অগ্রদূত কবি বেগম সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্মবার্ষিকী আজ। ‘জননী সাহসিকা’ হিসেবে খ্যাত এ কবি ১৯১১ সালের ২০ জুন জন্মগ্রহণ করেন।

সুফিয়া কামাল আজীবন মুক্তবুদ্ধির চর্চার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মারা যান এ কবি।

সৈয়দা সুফিয়া বেগম (সুফিয়া কামাল) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন তৎকালীন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের বাকেরগঞ্জ জেলার শায়েস্তাবাদে মামার বাড়ি রাহাত মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একটি সম্ভ্রান্ত বাঙালি মুসলমান জমিদার খান্দানের মেয়ে ছিলেন, যারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্তর্গত​শিলাউরের সৈয়দ বংশ হিসেবে পরিচিত।

সাত বছর থাকতে তার বাবা সৈয়দ আব্দুল বারী আইন পেশা এবং ঘরবাড়ি ছেড়ে সন্ন্যাসি-সুফি হয়ে যান। তাই সুফিয়া তার মা সৈয়দা সাবেরা বেগমের সাথে মামার বাড়িতে চলে আসেন। আর সেখানেই বড় হন তিনি। সুফিয়ার নানা খান বাহাদুর নবাব সৈয়দ মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন একজন জমিদার এবং ম্যাজিস্টেট।

বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সুফিয়া কামালের ছিল আপোষহীন এবং দৃপ্ত পদচারণা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর সুফিয়া কামাল পরিবারসহ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।

পাকিস্তান সরকার ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করলে তার প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলনে তিনি জড়িত ছিলেন এবং ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা দেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন।

১৯২৬ সালে তার প্রথম কবিতা ‘বাসন্তী’ প্রভাবশালী সাময়িকী সওগাতে প্রকাশিত হয়। ত্রিশের দশকে কলকাতায় অবস্থানকালে বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র যেমন রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র প্রমুখের দেখা পান তিনি। মুসলিম নারীদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার জন্য বেগম রোকেয়ার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলামে’ রোকেয়ার সঙ্গে সুফিয়া কামালের পরিচয় হয়। বেগম রোকেয়ার চিন্তাধারা ও প্রতিজ্ঞা তার মধ্যেও সঞ্চারিত হয়, যা তার জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছিল। দেশভাগের পূর্বে কিছু সময় তিনি নারীদের জন্য প্রকাশিত সাময়িকী বেগমের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদিক ছিলেন।

সুফিয়া কামাল ৫০টিরও বেশি পুরস্কার পেয়েছেন। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো, সাঁঝের মায়া (১৯৩৮), মায়া কাজল (১৯৫১), মন ও জীবন (১৯৫৭),উদাত্ত পৃথিবী (১৯৬৪), মৃত্তিকার ঘ্রাণ (১৯৭০)।

সুফিয়া কামালের জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com