কুমিল্লার দেবিদ্বারে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন সংসদ সদস্য রাজী ফখরুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদের অনুসারীরা। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি গাড়িতে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেন।
সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার ভিংলাবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থিত পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে ভিংলাবাড়ী এলাকার মো. সজিব মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত অন্যরা হলেন- ভিংলাবাড়ি এলাকার মো. জহির ও মাহবুব হোসেন, বানিয়াপাড়ার হিমেল ও শুভ।
জানা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ সোমবার রাতে নেতাকর্মীদের নিয়ে পৌরসভার আলিয়াবাদ এলাকায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন। একই সময়ে স্থানীয় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলও তার নেতাকর্মীদের নিয়ে একই এলাকায় মণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন। এক পর্যায়ে বহরের গাড়ি সাইডে রাখা নিয়ে উভয়ের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ তার গাড়িবহর নিয়ে পৌরসভার ফতেহাবাদ এলাকার একটি মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে ভিংলাবাড়ী এসে স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে চা পান করছিলেন। এ সময় এমপি রাজী ফখরুলের গাড়ি বহর আলিয়াবাদের মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে ফতেহাবাদ এলাকার অন্য আরেকটি মণ্ডপে যাওয়ার পথে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল থেকে আবুল কালাম আজাদ ও তার অনুসারীদের উদ্দেশ করে উসকানিমূলক স্লোগান দেন। তখন আবুল কালাম আজাদের অনুসারীরাও পাল্টা জবাব দেন। এতে রাজী ফখরুলের অনুসারীরা উত্তেজিত হয়ে আবুল কালাম আজাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে আবুল কালাম আজাদ বের হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে আসছিলাম। স্থানীয় এমপি রাজী ফখরুলের নেতাকর্মীরা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রথমে আলিয়াবাদ এলাকায় আমার নেতাকর্মীদের মারধর করে। পরে আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে ফতেহাবাদ এলাকায় একটি মণ্ডপ পরিদর্শন শেষে ভিংলাবাড়ী এলাকায় পৌঁছলে সেখানেও তারা হামলা চালায়। আমি নিবৃত্ত করতে গেলে তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীরা আমার ব্যবহৃত গাড়ি ও উপজেলা পরিষদের সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমার পাঁচজন নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করেছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য রাজী ফখরুলের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তার অনুসারী দেবিদ্বার উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন বলেন, সংসদ সদস্য রাজী ফখরুলের গাড়িবহর ফতেহাবাদ এলাকার পূজামণ্ডপে যাওয়ার পথে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের লোকজন আমাদের দেখে উসকানিমূলক স্লোগান দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। তবে উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি কে বা কারা ভেঙেছে আমাদের জানা নেই।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, সংঘর্ষের ঘটনাটি পূজামণ্ডপের বাইরে ঘটেছে। তবে কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..