২৮ অক্টোবর রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠ এখন উত্তপ্ত। দুটি দলই ঢাকায় খুব কাছাকাছি দূরত্বে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সমাবেশ থেকে সরকার পতনের চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ একই দিন রাজপথ নিজেদের দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে। এ দিনটিতে কী হতে চলেছে এ নিয়ে দেশজুড়ে জনসাধারণের মধ্যে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
শনিবারের মহাসমাবেশ ইস্যুতে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
তিনি বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ ঘিরে জনসাধারণ ও পুরো জাতির মধ্যে এই যে উদ্বেগ, এটা কেন হবে? এটা তৈরি করেছে সরকার। সরকার পতনের আন্দোলন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচিতে ২২ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে সরকার। বিএনপি তো কখনো পাল্টা আক্রমণে যায়নি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, সমাবেশগুলোতে সাংবিধানিক অধিকার ভঙ্গ করে ফোন ও লোকজনের শরীর চেক করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনীর লোকজনও করছে। তারা যদি এটা নিয়ে ভয়ে ভয়ে সারাক্ষণ চেঁচাতে থাকে, কিছু করলে দেখিয়ে দেব, কিছু হলে কঠোর হব ও শাস্তি দেব তাহলে তো উদ্বেগ জনসাধারণের মধ্যে ছড়াবেই।
তিনি বলেন, বিএনপি প্রমাণ করেছে গতবছর থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেকটি কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করেছে। কিন্তু এ মহাসমাবেশ নিয়ে সরকার কেন উদ্বেগ ছড়াচ্ছে আমাদের বুঝে আসে না।
আমরা আশা করছি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রশাসন সহযোগিতা করবে। এটা আমাদের আশা। এর বাইরে আমাদের কোনো ধরনের আশংকা নেই।
১৫ বছর আন্দোলন করেও বিএনপির সরকার হঠাতে ব্যর্থ কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অনেকে বলে গত ১৫ বছর ধরে সরকারকে হঠাতে পারছি না এ কথা সঠিক নয়। কারণ হচ্ছে, এটা সরকার না, এটা হচ্ছে অনির্বাচিত ফ্যাসিস্ট শাসকগোষ্টী। সারা বিশ্বজুড়ে ফ্যাসিস্ট শাসকদের আচরণ যদি দেখা যায়, তারাও এ ধরণের আচরণ করে থাকে। মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, বিএনপির প্রধান দুই নেতাকে মিথ্যা সাজা দিয়ে রাজনীতির বাইরে রাখা হয়েছে। এর পরও গত ১৫ বছর ধীরে ধীরে যেভাবে সংগঠিত হয়েছে এবং জনগণের কাছে পৌছাতে পেরেছে, যতটা নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছে এটিই তো রাজনীতির ইতিহাসে অবাক করা কাণ্ড।
এত অত্যাচারের পরও এটা কীভাবে সম্ভব হলো। ৫০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা। গত এক মাসে সাড়ে তিন হাজারের বেশি গ্রেফতার হয়েছে। গুম হয়েছে ৮০০ নেতাকর্মী। তারপরও তো বিএনপিকে দমাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এ নেতা।