অপহরণের এক সপ্তাহেও খোজ মিলছেনা বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ও উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের কমল রায়ের অপহৃতা কিশোরী মেয়ে নন্দিনি রায় (১৬)’র। মেয়ের চিন্তায় তার মা-বাবা এখন পাগলপ্রায়।
অপহৃতা ওই কিশোরীর মা রুমা রায় জানান, পাশর্^বর্তি গোপালগঞ্জ জেলার মোকসেদপুর উপজেলার কলিগ্রামের পূর্ন বৈরাগীর ছেলে ও তাদের প্রতিবেশী প্রদীপ মন্ডলের ভাগিনা উৎস্য বৈরাগী (২২) তার মামা প্রদীপ মন্ডলের বাড়িতে বেড়াতে এসে আমার মেয়ে নন্দিনি রায় (১৬)কে দেখার পর থেকে বিভিন্ন সময় তাকে মোবাইল ফোনেসহ বিভিন্ন ভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করে আসছিল। আমার মেয়ে নন্দিনি এ ঘটনা আমাদেরকে জানালে আমরা উৎস্য বৈরাগীসহ তার পরিবারের সদস্যদেরকে ডেকে বেশ কয়েকবার আমার মেয়েকে বিরক্ত করতে নিষেধ করি। তাতে তারা কর্নপাত করেনি।
গত ৫ নভেম্বর সকাল আনুমানিক পৌনে ১০টার দিকে আমার কিশোরী মেয়ে নন্দিনি রায় (১৬) পরীক্ষা দেয়ার জন্য নলচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সে নলচিড়া গ্রামের শিশির সরকারের বাড়ির সামনের পাঁকা রাস্তার ওপর পৌছামাত্র পূর্ব থেকে সেখানে ওৎ পেতে থাকা অপহরণকারী উৎস্য বৈরাগী (২২) ও তার সহযোগীরা মিলে জোর পূর্বক আমার কিশোরী মেয়ে নন্দিনিকে গাড়িতে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় নন্দিনির ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে দেখতে পায় যে, অপহরণকারীরা নন্দিনিকে জোর পূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে।
লোকমুখে খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে এসে মেয়েকে না পেয়ে দ্রæত অপহরণকারীদের বাড়িঘরসহ তাদের আতœীয় স্বজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোজ করি। এতেও মেয়ের কোন সন্ধ্যান পাইনি।
এরপর আমি অপহরণকারী উৎস্য বৈরাগী (২২), তার পিতা পূর্ন বৈরাগী (৫৩), মামা প্রদীপ মন্ডল (৩৫), পলাশ মন্ডল (৩২)সহ অজ্ঞামনামা ২/৩ জনকে আসামী করে গত ৭ নভেম্বর দুপুর সোয়া ২টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করি। আজ ৭ দিন হয়ে গেল পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার বা মামলার কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে মেয়েকে নিয়ে আমি ভিশন উৎকন্ঠায় আছি। আমার মত ওর বাবাও পাগল প্রায়। মেয়েটি বেঁচে আছে না অপহরণকারীরা তাকে মেরে গুম করে ফেলেছে তা আমি জানিনা। আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোরী মেয়েকে আমি আমার বুকে ফেরত চাই। থানা পুলিশ ও দেশের সরকারের কাছে আমি সহযোগীতা চাই। আপনারা আমার মেয়েকে খুজে বের করে দিন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী মডেল থানার এসআই মোঃ জুয়েল হাওলাদার বলেন, আসামীদের এখনও কোন ট্রেস পাওয়া যায়নি। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, প্রযুক্তির সহয়তায় আমরা অপহরণকারীদের অবস্থান চিহ্নিত করে অভিযান চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার ও ভিকটিমকে উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই হয়ত আমাদের অভিযান সফল হবে।