বরিশালের উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য এস এম জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না ভুক্তোভোগী এ পরিবার।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর জবানবন্দিমূলক একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন খোদ নিজ দলীয় স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলাজুড়ে চলছে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৩ মিনিট ০৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ‘ভুক্তভোগী গৃহবধূ সাক্ষাৎকার সংগ্রহকারীকে বলছেন, ‘ঘটনার দিন (৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি দুপুরের জন্য রান্না করতে ছিলেন। এসময় তার শাশুড়ি বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম জামাল হোসেন ওই গৃহবধূর ঘরে গিয়ে রান্নার কাজ করা অবস্থায় তাকে পেছন থেকে ঝাপটে ধরেন ও শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এ সময় ওই গৃহবধূ চিৎকার দিতে গেলে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা জামাল হোসেন তার মুখ চেপে ধরেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাকে (অভিযুক্ত) ধাক্কা মেরে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নেন। পরে ওই গৃহবধূ তার স্বামীর কাছে পুরো ঘটনা জানান।’
ভিডিও জবানবন্দিতে ওই গৃহবধূ আরো অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতা এস এম জামাল হোসেন আগে থেকেই বিভিন্ন সময়ে তাকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে যৌন সম্পর্কের জন্য নানা কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এমনকি মাঝে মধ্যে ওই গৃহবধূকে নিজের রুমে ডাকতেন তিনি।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গৃহবধূর ভিডিও জবানবন্দির অনুসন্ধানে জানা গেছে, যৌন হয়রানির শিকার ওই গৃহবধূ অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম জামাল হোসেনের মালিকানাধীন উজিরপুর বন্দর টার্মিনাল-সংলগ্ন বাড়ির ভাড়াটিয়া। শ্বাশুড়ি ও দিনমজুর স্বামীর সাথে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় তিনি ভাড়া থাকেন।
এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য এস এম জামাল হোসেনের কাছে চেয়ে ফোন করা হলে, তিনি সংবাদিক পরিচয় পেয়েই ফোনকলটি কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
গৃহবধূকে যৌন হয়রানির বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: কামরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি তার জানা নেই। এমনকি ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দিমূলক ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তিনি দেখেননি কিংবা ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ তিনি পাননি। অভিযোগ করলে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম জামাল হোসেন কয়েক বছর আগে পৌর সদরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের এক গৃহবধূর সাথে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার সময় হাতেনাতে এলাকাবাসীর হাতে ধরা পড়েন। পরে নিজ দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে এনেছিলেন।