আওয়ামীলীগ ও তার অংগ সংগঠনের সাবেক ও বতর্মান ৯ টি পদের নেতা তিনি
বিপ্লব বিশ্বাস :
ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টারে ছেয়ে ফেলেছে ভয়ংকর মাদক “খ্রিষ্টাল মেথের ” ব্যবসায়ী মাসুম খান রাজ। বরিশাল বিভাগে প্রথম এই মাদকের চালনটি আনেন এই রাজ। এরপর ১ শ গ্রাম মেথসহ র্যাবের হাতে তিনি ধরা পরেন। সম্প্রতি তিনি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে,নিজেকে আওয়ামীলীগ তথা তার অংগ সংগঠনের ৯ ধরণের সাবেক ও বর্তমান পদ উল্লেখ করে জেলা সদরে পোস্টারে ছেয়ে ফেলে। অথচ এই রাজ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী।
জানা যায়, পিরোজপুরে সদর উপজেলার টোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম খান রাজকে (২৭)। গত ২০২১ সালের শেষের দিকে তিনি র্যাবের কাছে গ্রেফতার হন। ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় ইউনিয়নের ওদনকাঠি গ্রামে নিজ বাসার সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় র্যাবের ডিএডি মো. আল মামুন শিকদার বাদী হয়ে তখন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। র্যাব জানায়, মাসুম খান নিজ বাড়ির সামনে রাস্তার ওপর বসে মাদক বিক্রি করছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সেখানে অভিযান চালায়।
এ সময় অন্য মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলেও মাসুম খানকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছে থাকা ১০০ গ্রাম ‘ক্রিস্টাল মেথ’ মাদক উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ১৫ লাখ টাকা। গ্রেফতারকৃত মাসুম খান রাজ ওদনকাঠি গ্রামের মৃত মতিউর রহমান খানের ছেলে এবং টোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে। তিনি পিরোজপুর পৌর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক বলেও জানা গেছে।
তিনি গেল ইউপি নির্বাচনে টোনা ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। এদিকে মাসুম খান মাদকসহ গ্রেফতার হওয়ার পরে তার দলীয় পরিচয়ের বিষয়টি অস্বীকার করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শংকরপাশা ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন স্বপন মল্লিক ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম শিকদার মন্টু জানান, মাসুম খান টোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক। তবে ঐ কমিটিকে উপজেলা কমিটি এখনো অনুমোদন দেয়নি। এ বিষয়ে টোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং নবনির্বাচিত টোনা ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান আলম খান হারুন জানান, মাসুম খান তার কমিটিরই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত। একটি সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি মতিউর রহমান সরদার এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি (সম্প্রতি মৃত্যুবরণকারী) শাহজাহান খান তালুকদার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ইমরান আলম খান হারুনকে সভাপতি এবং মাসুম খান রাজকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন বছরের জন্য ৬৯ সদস্যবিশিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদ দেওয়া হয়। এর আগে মাদকসহ মাসুমের স্ত্রী ও এক ভাই গ্রেফতার হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। জেলা পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান বলেন, মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। তার বিরুদ্ধে কোন মাদক সক্রান্ত তথ্য পেলে আইননুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।