বর্তমানে দেশের সব জায়গায় ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে আর দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। ই-পাসপোর্টের মধ্য দিয়ে দেশের সব নাগরিক বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।
তবে ই-পাসপোর্ট করা নিয়ে অধিকাংশ মানুষই নানান সমস্যার কথা বলে থাকেন। অনলাইনেই ই-পাসপোর্টের আবেদনপত্র পূরণ করা যায়। এ ছাড়া ই-পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো কাগজপত্র সত্যায়ন, ফরমে কোনো ছবি সংযোজন এবং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হয় না। জেনে নেওয়া যাক, সহজেই ই-পাসপোর্ট করার নিয়মাবলি সম্পর্কে…
প্রথমেই অনলাইনে আবেদন লিংকে প্রবেশ করে জেলা ও থানা বাছাই করে পরের ধাপে যেতে হবে। এরপর ই-মেইল অ্যাড্রেস দিয়ে পরের ধাপে পাসওয়ার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদের ইংরেজি ধরণ অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। তবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক অর্থাৎ যাদের বয়স ১৮ বছরের কম আবেদনকারী যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নাই, তাদের পিতা অথবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিতে হবে। ২০ বছরের ওপরে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র আবশ্যক। তবে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশন হতে আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ গ্রহণযোগ্য হবে।
তারকা চিহ্নিত ক্রমিক নম্বরগুলো অবশ্যই পূরণীয়। দত্তক কিংবা অভিভাবকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে পাসপোর্টের আবেদনের সঙ্গে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে জারিকৃত আদেশ দাখিল করতে হবে। আবেদন বর্তমান ঠিকানা সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস বা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস কিংবা বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে দাখিল করতে হবে।
১৮ বছরের নিম্নের এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকল আবেদনে ই-পাসপোর্টের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর এবং ৪৮ পৃষ্ঠার। প্রাসঙ্গিক টেকনিক্যাল সনদসমূহ (যেমন : ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ড্রাইভার ইত্যাদি) আপলোড বা সংযোজন করতে হবে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক জিও, এনওসি বা প্রত্যয়নপত্র অথবা অবসরোত্তর ছুটির আদেশ বা পেনশন বই আপলোড বা সংযোজন করতে হবে, যা ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষের নিজ নিজ ওয়েবসাইটেও আপলোড থাকতে হবে।
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিবাহ সনদ বা নিকাহনামা এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে তালাকনামা দাখিল করতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ফি এর ওপর নির্ধারিত হারে ভ্যাটসহ অন্যান্য চার্জ (যদি থাকে) অতিরিক্ত হিসাবে প্রদেয় হবে। বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদেয় হবে।
কূটনৈতিক পাসপোর্টের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও ওয়েলফেয়ার উইং অথবা ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় বরাবর আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।
বৈদেশিক মিশন হতে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হলে স্থায়ী ঠিকানার কলামে বাংলাদেশের যোগাযোগের ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
অতি জরুরি পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে (নতুন ইস্যু) নিজ উদ্যোগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সনদ সংগ্রহ পূর্বক আবশ্যিকভাবে আবেদনের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে অতি জরুরি পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে দুই কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। দেশের অভ্যন্তরে জরুরি পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে। দেশের অভ্যন্তরে রেগুলার পাসপোর্ট প্রাপ্তির লক্ষ্যে আবেদনের সঙ্গে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দাখিল করা হলে অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক থাকা সাপেক্ষে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট প্রদান করা হবে।
আবেদনের সময় মূল জাতীয় পরিচয়পত্র, অনলাইন জন্মনিবন্ধন সনদ এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল সনদ, সরকারি আদেশ বা অনাপত্তি প্রদর্শন বা দাখিল করতে হবে।
পাসপোর্ট রিইস্যুর ক্ষেত্রে মূল পাসপোর্ট প্রদর্শন করতে হবে। হারানো পাসপোর্টের ক্ষেত্রে মূল জিডির কপি প্রদর্শন ও দাখিল করতে হবে।
ছয় বছর বয়সের নিম্নের আবেদনের ক্ষেত্রে ৩ আর সাইজের ল্যাব প্রিন্ট ছবি দাখিল করতে হবে।
পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে দ্রুত নিকটস্থ থানায় জিডি করতে হবে। পুনরায় পাসপোর্টের জন্য আবেদনের সময় পুরাতন পাসপোর্টের ফটোকপি এবং জিডি কপিসহ আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে।