স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে, এখন দেশ গড়ার সময় উল্লেখ করে ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচিগুলো হলো, ২১ থেকে ৩১ আগস্ট দেশের সব জেলা ও মহানগরে ‘তৃণমূল দায়িত্বশীল সম্মেলন’ ও ১ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর দেশের সব থানায় থানায় ‘গণ সমাবেশ’ করা হবে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এসময় কর্মসূচির লক্ষ্য উল্লেখ করে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, এখন সময় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচারভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণের। তাই গণহত্যাকারী, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ আর ভোট চোরেরা যাতে আগামীতে পুনর্বাসিত হতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
সে লক্ষ্যে-
১. গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে গত ১৬ বছরে সংঘটিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। এক্ষেত্রে যে সব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।
২. তদন্ত সাপেক্ষে দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সব দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
৩.আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সব কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
৪. দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠির চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
৫. নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (চজ) পদ্ধতি চালু করতে হবে।
৬. আওয়ামী দুঃশাসনের বিগত ১৬ বছরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এদেশের সাধারণ শিক্ষাখাতের মান ও নৈতিকতা। এই ক্ষতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৭. গ্রাম পুলিশকে জাতীয়করণ করে তাদের সম্মানজনক বেতন ও ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
এই আন্দোলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও সহযোগী সংগঠনের সক্রিয় অবস্থান ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১৮ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এর মধ্যে গুরুতর আহত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৫০ জনেরও অধিক।