ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সাথে সঙ্ঘাতে সরাসরি ইসরাইলের পক্ষে অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। গাজায় আগ্রাসন চালাতে ইসরাইলে দ্রুত অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
মার্কিন প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন দেশটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনৈতিক-সামরিকবিষয়ক ব্যুরোর কংগ্রেসনাল এবং পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা জোশ পল তার পদত্যাগপত্রে লেখেন, বাইডেন প্রশাসনের একপক্ষের জন্য অন্ধ সমর্থন অদূরদর্শী, ধ্বংসাত্মক, অন্যায্য নীতিগত সিদ্ধান্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, ‘আমরা যে মূল্যবোধগুলো সমর্থন করি, এটি তার বিপরীত।’
তিনি লিখেছেন, ‘ইসরাইল যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ইসরাইল-ফিলিস্তিন উভয়ের জন্যই আরো গভীর দুর্ভোগের কারণ হবে। আমি ভয় করি, কেননা আমরা এই বিগত দশকগুলোতে একই ভুলগুলো বারবার করেছি।’
এক সাক্ষাৎকারে জোশ পল বলেন, ‘নজিরবিহীন হামলায় হামাস যা করেছে তার ভয়াবহতা অনেক বেশি। তাই আমি সম্ভাব্য ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া বা চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মাত্রাকে ভয় করি। আমি ইসরায়েলি সরকারের আত্মরক্ষার অধিকারকে স্বীকার করি। তবে সেই অধিকারকে স্বীকার করতে গিয়ে কত ফিলিস্তিনি শিশুকে মারা যেতে হবে তা নিয়েই আমার প্রশ্ন।’
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার আল-আহলি হাসপাতালে বোমা হামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, এ হামলায় কমপক্ষে ৫০০ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনিদের দাবি, এ হামলা ইসরাইল চালিয়েছে। এমন নৃশংস হামলার পরও ইসরাইলের পক্ষেই সাফাই গাইলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরাইলের তেল আবিবে পৌঁছানোর কয়েক মিনিট পর বুধবার প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সাথে নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেন বলেন, ফিলিস্তিনের হাসপাতালে হামলায় ইসরাইল দায়ী নয়। এ হামলা অন্য কোনো পক্ষ থাকতে পারে। আল-আহলি হাসপাতালে হামলার কারণে তিনি ‘ক্ষুব্ধ’ এবং ‘গভীরভাবে মর্মাহত’। কিন্তু তিনি ইসরাইলের সমালোচনা করেননি।
তিনি বলেন, ‘আমি যা দেখেছি তার ওপর ভিত্তি করে এই হামলা অন্য দল করেছে বলে আমার মনে হচ্ছে, ইসরাইল নয়।’
ইসরাইলের প্রতি নিজের সমর্থন প্রকাশ করে জো বাইডেন বলেন, ‘আমি একেবারে সাধারণ একটি কারণে আজ এখানে উপস্থিত হতে চেয়েছিলাম। আমি চাই ইসরাইলের জনগণ এবং বিশ্বের মানুষ জানুক যে যুক্তরাষ্ট্র কার পাশে দাঁড়িয়েছে… আমি ব্যক্তিগতভাবে এখানে এসে বিষয়টি পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম।’
সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং আল জাজিরা